আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়াকে আহ্বায়ক এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে সদস্যসচিব করে আত্মপ্রকাশ হলো ‘গণঅধিকার পরিষদ’-এর। দলটির পথচলার দিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি তোলা হয়েছে।
পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ‘গণঅধিকার পরিষদ’-এর আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করেন নুরুল হক নুর। দলটির স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘জনতার অধিকার আমাদের অঙ্গীকার’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
৮৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে নানা পেশার মানুষ স্থান পেয়েছেন বলে জানান নুর। ঘোষণাপত্রে নুর বলেন, ‘৫০ বছর হলো বাংলাদেশের বয়স। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা আজ প্রিয় দেশবাসীর সামনে হাজির হয়েছি। মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা করে, আমূল বদলে দেয়ার বার্তা নিয়ে, নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে।
‘আমরা আজ যখন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিচ্ছি, তখন আমাদের মাতৃসম পৃথিবী দুটি বড় সংকট মোকাবিলা করছে। আজ সকলের সম্মুখে দাঁড়িয়ে এই প্রত্যয় ঘোষণা করছি যে, আমরা নানান ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বহুস্তরবিশিষ্ট বৈষম্য লাঘব করে বাংলাদেশকে মানবিক উন্নয়নের প্রগতিশীল ধারায় স্থাপন করব ইনশাআল্লাহ।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশন নিয়ে আন্দোলন করা তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। আমাদের আসল দাবি হলো আমরা একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই। জাতিসংঘের পরিচালিত একটি নির্বাচনব্যবস্থা আমরা চাই। এটা ছাড়া নির্বাচনে নামার কোনো মানে হয় না।
‘যারা এর আগে দুইবার প্রতারণা করেছে, তারা যে আবার করবে না সেটার ভরসা আমি করি না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে অন্য সব দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। আমি আশা করি, দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।’
‘গণঅধিকার পরিষদ’ কাদের সঙ্গে জোট গড়বে, এমন প্রশ্নে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘কার সঙ্গে জোট করব সেটা তখনকার পরিস্থিতি দেখে আমরা ঠিক করব। আমাদের পরিকল্পনা ৩০০ আসনে এই মুহূর্তে প্রার্থী দেয়া। তবে পরিস্থিতির ওপর তা নির্ভর করছে।’
দল কাদের টাকায় পরিচালিত হবে, এমন প্রশ্নে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘দলটি যেহেতু গণমানুষের, সেহেতু গণমানুষের টাকায় এই দল পরিচালিত হবে। কোটিপতিদের টাকা নিয়ে আমরা দল চালাব না।’
আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে মোট ২১ দফা খসড়া ঘোষণা করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
খসড়া কর্মসূচি পাঠ করেন যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান। তা ছাড়া, দলটির চারটি মূলনীতির কথা জানান তিনি। এগুলো হচ্ছে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, অধিকার এবং জাতীয় স্বার্থ।