নীলফামারী সদর উপজেলার মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের পরিত্যক্ত ঘরের টিন ও কাঠ অনুমতি ছাড়া বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আলী হোসেন জানান, সেসব মালামালের দাম প্রায় ২৫ হাজার টাকা হলেও ওই শিক্ষক বিক্রি করেছেন ১৬২০ টাকায়।
কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রি করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম রতন কুমার রায়। তিনি পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, স্কুলের শিক্ষকদের জানিয়েই মালামাল বিক্রি করেছেন। এখন দায় এড়াতে তাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে এগারটার দিকে দাপ্তরিক কাজে স্কুলের বাইরে যান প্রধান শিক্ষক আলী হোসেন। সে সময় স্কুলের পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরের টিন ও কাঠ বিক্রি করে দেন রতন কুমার।
প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে সে সময় দায়িত্বে ছিলেন সহকারী শিক্ষক মমতা বেগম।
তিনি বলেন, ‘স্যার (প্রধান শিক্ষক) চলে যাওয়ার পর টিন-কাঠ বিক্রি করে দেন রতন কুমার। পরে এসে আমাকে জানান যে ১৬২০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আমাকে বিক্রির টাকা দিলে আমি গ্রহণ করিনি।’
ওই স্কুলের পাশেই বাড়ি মাহাবুল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘সেদিন বিক্রির সময় অনেক লোক ছিল। আমিও ছিলাম। টিন ও কাঠ বিক্রি করে দেন রতন কুমার।’
প্রধান শিক্ষক আলী হোসেন বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে টিন-কাঠ বিক্রির পর বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে নিয়ে মিটিং করা হয়। মিটিং শেষ হলে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন রতন।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রতন কুমার বলেন, ‘আমি বিক্রি করেছি ঠিকই, কিন্তু এতে সম্মতি ছিল অন্য শিক্ষকদেরও। প্রধান শিক্ষককেও নাকি জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আপা মমতা বেগম। সবাইকে জানিয়েই তো বিক্রি করা হয়েছে। আমাকে হেয় করার জন্য অভিযোগ দিয়ে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন প্রধান শিক্ষক।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জবান উদ্দিন বলেন, ‘ওই শিক্ষক নিয়মকানুন উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের টিন, কাঠ বিক্রি করেছেন, এটি অন্যায় করেছেন। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান শিক্ষককে সভায় বলা হয়। সে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান প্রধান ব্যবস্থা নেবেন।’
এ বিষয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আলী হোসেনের একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করতে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’