বায়োপসির পর কয়েক ঘণ্টা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে কেবিনে নেয়া হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে।
সোমবার রাতেই বেগম জিয়াকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয় বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এটা তো আসলে অপারেশন ঠিক না। এটা একটা ডায়াগনস্টিক পার্ট। যেকোনো ছোটোখাটো কিছুর পরই আইসিইউতে রাখা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক ঘণ্টা আইসিইউতে রেখে রাতেই তাকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে।’
এর আগে সোমবার দুপুরে খালেদা জিয়ার বায়োপসি হয়। এরপর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট্ট একটি অপারেশন হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা দেখলেন, উনার একটা বায়োপসি করা দরকার। ছোট একটা লাম্প (পিণ্ড) আছে এক জায়গায়। যেহেতু লাম্প আছে, তার নেচার অফ ভিউ জানার জন্য লাম্পে বায়োপসি করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকেই হাসপাতালটিতে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শুরুতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে চিকিৎসা চলছিল বিএনপি নেত্রীর।
১৫ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করানো হয় খালেদা জিয়ার। এরপর ফিরিয়ে আনা হয় গুলশানের বাসভবনে। অবস্থার অবনতি হলে ২৭ এপ্রিল একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বিএনপির প্রধানকে।
৩ মে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বিএনপি থেকে খালেদা জিয়ার করোনা মুক্তির খবর দেয়া হয় ৯ মে।
তবে সিসিইউতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। ৩ জুন চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে কেবিনে ফিরিয়ে আনা হয়। এর ১৬ দিন পর বাসায় ফেরেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
হাসপাতালে নেয়ার কিছুদিন পর খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নিয়ে যেতে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিবার ও দল। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা হয় বিএনপি ও খালেদার পরিবারের।
নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনও করেন খালেদা জিয়া, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়নি সরকার। জানানো হয়, বিএনপি নেত্রী একাধিক দণ্ডিত মামলার আসামি হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার সুযোগ নেই।
এর মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন খালেদা জিয়া। মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১৯ জুলাই প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার পর একই হাসপাতালে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন ১৮ আগস্ট।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে দল থেকে জানানো হয়েছে। আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা ছাড়াও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা রয়েছে তার। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে খালেদা জিয়ার চোখেও অপারেশন করা হয়।
এর মধ্যে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার।