হাজারো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটি সদরে শেষ হয়েছে দুই দিনের ৩৮তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান।
উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রে সোমবার বিকেলে শেষ হয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এই শ্রেষ্ঠ দান উৎসব।
বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পূর্ণচক্র চাকমা জানান, দুই দিনের এই উৎসবে দূরদূরান্ত থেকে হাজারো পুণ্যার্থী অংশ নেন। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বিহার প্রাঙ্গণ। ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুদিনব্যাপী দান উৎসবের দ্বিতীয় দিন।
তিনি আরও জানান, সকালে বৌদ্ধরত্ন উপাধিপ্রাপ্ত ও বনভান্তের প্রধান শিষ্য ভদন্ত শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবিরকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন ভক্তরা। বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রূপক চাকমার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে পঞ্চশীল পাঠ করেন কমিটির সভাপতি পূর্ণচক্র চাকমা।
দুপুরে কল্পতরু ও কঠিন চীবরকে পুরো বিহার এলাকা প্রদক্ষিণ করে আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। বিকেলে পঞ্চশীল পাঠ করেন স্থানীয় সাংবাদিক বিহারি চাকমা।
সন্ধ্যায় জগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনায় ফানুস ওড়ানো হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র বিহার পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি দয়াল কৃষ্ণ চাকমা।
হাজারো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটি সদরে শেষ হয়েছে দুই দিনের ৩৮তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান
বিশেষ বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার স্ত্রী রিপা চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগীয় প্রকৌশলী মহিনী রঞ্জন চাকমার স্ত্রী নিরালা চাকমা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য প্রভাত চাকমা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নতুন ধন চাকমাসহ অনেকে।
পরে বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কঠিন চীবর দান, সূত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, কল্পতরু প্রদক্ষিণ ও ফানুস বাতি উৎসর্গসহ নানা ধরনের দান সম্পন্ন হয়।
এক ধর্মীয় সভায় পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে ধর্ম দর্শন দেন নন্দপাল মহাস্থবির।
ভিক্ষুদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন রাজবন বিহারের সিনিয়র ভিক্ষু ভদন্ত সত্যপ্রেম মহাস্থবির, দীঘিনালা বনবিহার আবাসিক সিনিয়র ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ শুভবর্ধন মহাস্থবির, ধুতাঙ্গটিলা বনবিহার অধ্যক্ষ দেবধাম্মা মহাস্থবির, যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ কল্যাণজ্যোতি মহাস্থবিরসহ অনেকে।
গৌতম বুদ্ধের প্রধান সেবিকা মহাপুণ্যবতী বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে তুলা থেকে সুতা ও সুতা থেকে ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র (চীবর) বুননের মধ্য দিয়ে এবং ধর্মীয় নানা আচার মেনে রোববার বিকেলে শুরু হয় কঠিন চীবর দান উৎসব।