গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাকে বিতর্কিত উল্লেখ করে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।
ইউনিয়ন পরিষদের পাশে সোমবার দুপুরে চৈতন্যবাজারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
যারা বিক্ষোভ করেছেন তাদের অভিযোগ, প্রার্থী সাইফুল ইসলামের বাবা আজিজুল হক মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফুল দাবি করেছেন, তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করতেই অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি পক্ষ।
মানববন্ধনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামছুল হক বলেন, তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাইফুলকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। এমনকি তিনি দলের কর্মী-সমর্থকও ছিলেন না। সম্প্রতি তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে এসেছেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মৌলভী আজিজুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিস কমিটির চেয়ারম্যান (থানা) ছিলেন। তখন তিনি স্থানীয় ইমামগঞ্জ সিনিয়র মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল ছিলেন। আমি দশম শ্রেণিতে পড়তাম।
‘আজিজল হক ছিলেন পিস কমিটির সদস্য। তারা পাক বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে তথ্য সরবরাহ কাজে নিয়োজিত ছিল।’
এ নিয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আউলিয়া বলেন, ‘রাজাকারের ছেলের হাতে দলীয় নৌকা প্রতীক কীভাবে গেল? কারা এখানে মদদ দিলেন? সব খতিয়ে দেখা দরকার। সাইফুলরা ৮ ভাইয়ের মধ্যে ৬ জনেই জামায়াতের কর্মী-সমর্থক। তাদের মধ্যে মৌলভী তারা মিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য।’
ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আজমুল হোসেন পলাশ বলেন, ‘তিনবারের ইউপি চেয়ারম্যান ও তারাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ খোকাকে দলীয় নেতাকর্মীরা সমর্থন দিয়েছিলেন। সারা জীবন তিনি দলের সুখে দুঃখে পাশে ছিলেন। দলীয় প্রতীক তিনিই পাওয়ার যোগ্য।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগ নেতা মাহালম মিয়া, শিক্ষক নাজমুল হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা রিপন মিয়া ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন মিয়াসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে সাইফুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান বক্তারা।
অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ১৯৮০ সালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পদকের দায়িত্বে ছিলাম। সরকারি চাকরি হওয়ায় সেখানে যোগদান করি। গত বছরে অবসরে এসে আমি পুনরায় ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে যোগ দেই।নেত্রী আমাকে যোগ্য প্রার্থী বিবেচনা করে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি এ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।’
তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের কেউ জামায়াত কিংবা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা আওয়ামী পরিবারের সদস্য। একটি মহল আমাদের জামায়াত শিবির বানানোর পাঁয়তারা করছেন। এ ছাড়া আমার বাবা কোনো শান্তি কমিটির সদস্য কিংবা মুক্তিবাহিনীর বিপক্ষে ছিলেন না।’