বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাছে গাছে রঙের খেলা

  •    
  • ২৫ অক্টোবর, ২০২১ ১৬:৩০

ইউএনও সাদিক বলেন, ‘রংধনু সবারই ভালো লাগে। কালো মেঘ থেকে বৃষ্টির পর আকাশে রংধনুর উদয় হয়। একটু আগে যে মেঘে মানুষের মন খারাপ হয়, কিছুক্ষণ পর রংধনুতে সেই মন ভালো হয়ে যায়। তাই আমরা চেষ্টা করেছি চিত্রশিল্পীর মাধ্যমে গাছের গায়ে সাত রং ব্যবহার করতে। আমার বিশ্বাস, বাহারি রঙ দেখে সবার মনই রঙিন হয়ে যায়।’

কিছুদিন আগেও গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের পরিবেশ ছিল গতানুগতিক, নিষ্প্রাণ। ছিল না কোনো রঙের বাহার। সেই নিষ্প্রাণ চত্বরে এখন ছড়িয়ে আছে নানা রং।

তবে দেয়াল নয়, রাঙিয়ে তোলা হয়েছে গাছকে। শতাধিক গাছের কোনোটায় আঁকা হয়েছে শহীদ মিনার, কোনোটায় পাখি, কোনো গাছে করা হয়েছে মনের খেয়ালে আঁকিবুঁকি। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। মনে হয় যেন উৎসব চলছে।

একদিকে পৃথিবীর নানা প্রান্তে গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে আর সেখানে গাছকে এমন ভালোবেসে রাঙিয়ে তোলার প্রয়াস নজর কেড়েছে স্থানীয়দের।

এই কাজের উদ্যোক্তা কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিবলী সাদিক। আর চিত্রকর্মগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন তরুণ চিত্রশিল্পী আহসান হাবীব সাজু। সাজুকে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় আরেক শিল্পী আয়নাল হোসেন।

আয়নাল নিউজবাংলাকে জানান, কালীগঞ্জে তার একটি আর্টের দোকান আছে। সেখানে তিনি নানা ধরনের সাইনবোর্ড লেখেন, দেয়ালে লেখেন। তবে এ ধরনের কাজ একেবারেই প্রথম।

তিনি বলেন, ‘গাছের গায়ে চিত্রকর্ম করার পর খুবই ভালো লাগছে। মনে হয়েছে প্রকৃতির জন্য কিছু করেছি।’

কথা হয় সাজুর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি, গাছ আর মানুষের যে সম্পর্ক তা তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। প্রকৃতি বাঁচলে মানুষ বাঁচবে, বাঁচবে পাখি ও জীবন। প্রতিটি সৃষ্টি একে অপরের সঙ্গে জড়িত।

‘আমরা সভ্যতার চরম শিখরে আরোহণ করেছি কিন্তু বিবেককে এখনও জাগ্রত করতে পারি নাই। প্রতিনিয়ত গাছ ধ্বংস করছি। গাছ ধ্বংসের ফলে পরিবেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। আমি গাছের গায়ে রং দিয়ে গাছেরও যে জীবন-যৌবন আছে সেটা মনে করিয়ে দিয়েছি।’

সাজু আরও বলেন, ‘গাছের অনেক দুঃখ আছে। যেগুলো সে প্রকাশ করতে পারে না। রং-তুলির আচড়ে সেই কষ্টগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।’

প্রায় এক মাস আগে শেষ হয়েছে রঙের কাজ। রংধনুর কথা ভেবে গাছকে রাঙানোর পরিকল্পনা করেন বলে জানান ইউএনও সাদিক।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রংধনু সবারই ভালো লাগে। কালো মেঘ থেকে বৃষ্টির পর আকাশে রংধনুর উদয় হয়। একটু আগে যে মেঘে মানুষের মন খারাপ হয়, কিছুক্ষণ পর রংধনুতে সেই মন ভালো হয়ে যায়। তাই আমরা চেষ্টা করেছি চিত্রশিল্পীর মাধ্যমে গাছের গায়ে সাত রং ব্যবহার করতে। আমার বিশ্বাস, বাহারি রঙ দেখে সবার মনই রঙিন হয়ে যায়।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘সারা দিন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্থানীয়দের সেবা দিতে ব্যস্ত থাকেন। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই রঙিন গাছগুলো দেখে তাদের মন ভালো হয়ে যায়। আমার মনে হয়, সেবা প্রত্যাশীদের মনও ভালো হয়।’

উপজেলা সমবায় অফিসে কর্মরত আসাদুজ্জামান এরশাদ বলেন, ‘পুরো উপজেলা পরিষদ রঙিন সাজে সাজানো হয়েছে। দেখতে খুবই ভালো লাগছে। সারা দিনের কাজের পর ক্লান্তি থাকলেও এত রং দেখে মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়।’

গাছের গায়ে এমন চিত্রকর্মের কথা শুনে বন্ধুদের নিয়ে দেখতে এসেছেন সোহেল আহমেদ।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কালীগঞ্জের এক বন্ধুর ফেসবুকে গাছের গায়ের চিত্রকর্মগুলোর ছবি দেখেছি। তাই বন্ধুদের নিয়ে চলে এসেছি দেখার জন্য। এই চিত্রকর্মের কারণে যে কেউ গাছগুলো কাটার আগে একবার ভাববে।’

এ বিভাগের আরো খবর