তদন্তের সময় অর্থ দাবি করার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
আগামী ৭ নভেম্বর তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্তের সময় অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত রিটকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তকাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামাল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের ঘটনায় এক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুদক। কিন্তু তদন্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।
‘তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন চেয়ে দুদকে বারবার আবেদন করেও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই দম্পতি। পরে আদালত শুনানি নিয়ে আদেশসহ রুল জারি করেন।’
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য জানাতে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ মো. আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগমকে নোটিশ দেয় দুদক। আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার ঢাকা সদরের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার। বর্তমানে তিনি পিরোজপুরের জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত।
দুদকের (ঢাকা-১) উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওই নোটিশ দেন, তবে নোটিশের উপযুক্ত জবাব না মেলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর ওই দম্পতিকে আসামি করে ঢাকার বিচারিক আদালতে মামলা করে দুদক। ২৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন, ৯০ লাখ ১২ হাজার ৭৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা দখল রাখার অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থ দিয়ে তার নিজ নামে সম্পদ অর্জন করেন। এই সম্পদ নিজ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার পর তদন্তে নামেন দুদকের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন। তদন্তের সময় আলমগীর বারবার আসামিদের অনৈতিক লেনদেনের প্রস্তাব দিতে থাকেন বলে অভিযোগ করা হয়।