বাড়ির গেট খোলা পেয়ে ভেতরে ঢুকেছিলেন পরিচিত চোর আবদুল মালেক। চিনে ফেলায় তিনি হত্যা করেন গৃহকর্তা নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী কামরুন নাহারকে।
চাঁদপুরের শাহরাস্তির নাওড়া এলাকার জোড়া খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তার করা হয়েছে খুনে সরাসরি জড়িত আবদুল মালেক ও তার দুই সহযোগীকে।
পিবিআই জানায়, চাঁদপুরের নুরুল আমিন ও কামরুন নাহার দম্পতিকে হত্যার ঘটনায় আসামি আবদুল মালেককে শুক্রবার রাত ৮টায় লাকসাম রেলওয়ে জংশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মালেক জোড়া খুনের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
মামলাটি তদন্ত করছেন চাঁদপুর জেলা পিবিআইয়ের পরিদর্শক কবির আহমেদ। তিনি জানান, গত ১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ির ছাদে পাওয়া যায় গৃহকর্তা নুরুল আমিনের মরদেহ। তার স্ত্রী কামরুন নাহারের রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায় ঘরের মেঝেতে।
খুনের ঘটনায় দম্পতির ছেলে জাকারিয়া আহমেদ বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় মামলা করেন। আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের।
শাহরাস্তি থানার পুলিশ প্রায় এক মাস তদন্ত করে হত্যার উদ্দেশ্য ও খুনিদের ব্যাপারে ধারণা পায়নি। পরে বাদীর আবেদনে আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় পিবিআইকে।
চাঁদপুরে দম্পতি খুনের ঘটনায় পিবিআই গ্রেপ্তার করেছে আবদুল মালেক নামের আসামিকে। ছবি: সংগৃহীত
আসামি মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের পর পিবিআই জানায়, ঘটনার রাতে নুরুল আমিনের বাড়ির গেট খোলা পেয়ে মালেক চুরি করতে ভেতরে ঢোকেন। সিঁড়ি দিয়ে উঠে ছাদে অবস্থান নেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে নুরুল ছাদে উঠলে তাকে পেছন থেকে রড দিয়ে আঘাত করেন আবদুল মালেক। মাথায় আঘাত পেয়ে পড়ে যান নুরুল। তখন তার গলায় মোজা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
এরপর মালেক ছাদ থেকে নেমে ঘরের মালামাল লুটের চেষ্টা করেন। তখন একটি ফাইল কেবিনেটের ড্রয়ার টানাটানি করলে জেগে যান কামরুন নাহার। তিনি ঘরের বাল্ব জ্বালাতেই সামনে দেখতে পান আবদুল মালেককে। মূলত চিনে ফেলার কারণে লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়।
কামরুন নাহার রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে গেলে আবদুল মালেক তার কানের দুল ও নুরুল আমিনের মোবাইল ফোন নিয়ে আবার ছাদে যান। হত্যায় ব্যবহার করা লোহার রড ছাদ থেকে উত্তর দিকে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। এরপর কাঁঠাল গাছ বেয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যান।
পিবিআই জানায়, চুরি করা সে মোবাইল ফোনটি আবদুল মালেক বিক্রি করেছিলেন ইলিয়াছ হোসেন নামের একজনের কাছে। তাকে সহযোগিতা করেছিলেন বশির নামের আরেকজন। মালেকের সঙ্গে এ দুজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের তদন্ত ব্যুরোটি আরও জানায়, জোড়া খুনের ঘটনায় আবদুল মালেকের সঙ্গে আর কারা ছিল তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।