রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুপল্লিতে সহিংসতার ঘটনায় ‘প্রধান অভিযুক্ত’ সদ্য সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. সৈকত মণ্ডল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. দেলোয়ার হোসেনের আদালতে রোববার সন্ধ্যায় তিনি জবানবন্দি দেন। শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধক মো. শহিদুর রহমান।
হিন্দুপল্লিতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে থাকা ৩৭ আসামিকে বিকেলে আদালতে তোলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান নতুন করে রিমান্ড আবেদন না করায় শুনানি শেষে তাদেরও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
আসামিদের পক্ষে জামিন আবেদন করেছিলেন একাধিক আইনজীবী। তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, রিমান্ডে আসামিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এখনও তদন্ত চলছে। প্রয়োজনে আবারও রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
সৈকত মণ্ডলের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুদীপ্ত শাহীন জানান, র্যাবের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় সৈকতকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি স্বেচ্ছায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
সুদীপ্ত শাহীন জানান, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় মসজিদের ইমাম রবিউল ইসলামকে আদালতে তোলা হলে তিনিও স্বেচ্ছায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতকে জানিয়েছেন।
১৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জের রামনাথপুর উত্তর পাড়া হিন্দুপল্লিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আলাদা চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে তিনটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। একটি অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলা।
রোববার পর্যন্ত চার মামলায় ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান।
পীরগঞ্জে হিন্দুপল্লিতে সহিংসতার ঘটনায় ‘প্রধান অভিযুক্ত’ সদ্য সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মণ্ডল ও তার সহযোগী বটেরহাট মসজিদের ইমাম রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব।
পীরগঞ্জ থানায় রোববার সকালে এই মামলা করেন র্যাব-১৩-এর ডিএডি আব্দুল আজিজ।
সৈকত মণ্ডল কারমাইকেল কলেজের ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেয়ায় সম্প্রতি তাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা জানায় ছাত্রলীগ।
সৈকত ও তার সহযোগীর বিষয়ে শনিবার র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অরাজকতা তৈরি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার এবং মাইকিং করে হামলাকারীদের জড়ো করেন বলে জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার সৈকত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে উত্তেজিত করে তোলেন। এ ছাড়া তিনি ওই হামলা ও অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন।