দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেটের সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অংশের যোগাযোগ আরও উন্নত হচ্ছে। এ পথে বিদ্যমান দুই লেনের সড়কটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনে উন্নীত করা হবে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোববার ২৬৬ কিলোমিটার সড়কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দুই পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনের সড়কটি দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-সিলেট এবং সিলেট-তামাবিল অংশে বাস্তবায়ন হবে। সড়কটি সাসেক (সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন) রোড করিডরের অংশ।
ছয় লেনের ভিত স্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেটের সড়কগুলো ছয় লেনে উন্নীত করার ফলে দারুণ কিছু সুযোগ আসবে। রাস্তাটা হয়ে গেলে যে যোগাযোগটা বাড়বে, তার জন্য আমাদের দেশের বিশেষ উন্নতি হবে। আন্তর্জাতিক সড়ক নেটওয়ার্কেও বাংলাদেশ যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
‘আমি বলব, সারা দেশে একটা যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। এই যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আর কখনো কেউ পেছনে টানতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সিলেটে এক জনসভায় ঢাকা-সিলেট সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্প অনুমোদনের পর সেটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ পথে এখন দৈনিক প্রায় ২০ হাজার গাড়ি চলাচল করে।
দুই প্রকল্পের মধ্যে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডর-৬ লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ সড়কের কাজ শেষ হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এতে ঋণ দিচ্ছে।
২০৯.৩২৮ কিলোমিটারের এ সড়কটি ৩৭ থেকে ৪০.৬০ মিটার প্রশস্ত হবে। দুই পাশের সার্ভিস লেন হবে ৫.৫ মিটার চওড়া। এ পথে ৬৬টি ছোট সেতু, ৫টি রেলওয়ে ওভারপাস, ৮টি গাড়ির ওভারপাস, ৩৭টি ইউলুপ এবং ২৬টি ফুটওভার ব্রিজ থাকবে।
মোট ছয়টি প্যাকেজে এ কাজ শেষ হবে। এরই মধ্যে দুটি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দীর্ঘপথে যাত্রার ক্লান্তি দূর করতে যাত্রী ও চালকদের বিশ্রামের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে দুটি আধুনিক সার্ভিস এরিয়া নির্মাণ করা হবে।
গত ১ সেপ্টেম্বর সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। ৫৬ কিলোমিটারের এ সড়কে ৩ হাজার ৫৮৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এতে ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)।
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ অংশের কাজ শেষ হবে। এরই মধ্যে টেন্ডার ডকুমেন্টের কাজ শেষ হয়েছে। ডিজাইন রিভিউয়ের কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পের সহায়ক প্রকল্প হিসেবে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকার একটি সহায়ক প্রকল্পও চলমান।