বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামলার জট কমাবে ‘মেডিয়েশন’

  •    
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:০৬

মেডিয়েশন হল মামলা নিষ্পত্তির বিকল্প একটি পন্থা। এই পদ্মতিতে আদালতের বাইরে বাদী-বিবাদীগণের বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন একজন মেডিয়েটর বা মধ্যস্থতাকারী।

মামলা নিষ্পত্তির বিকল্প পন্থা হিসেবে মেডিয়েশন ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মামলা মেডিয়েশন বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সারাদেশের ২৮০ জন বিচারককে সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘মূলত মেডিয়েশন হলো বিরোধ নিষ্পত্তির বিকল্প একটি পদ্ধতি। যে পদ্ধতি আদালত-ট্রাইব্যুনালের প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে থেকে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে মেডিয়েশন পদ্ধতি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে অনুসরণ করা হচ্ছে। যার মধ্যে পঞ্চায়েত অন্যতম। পঞ্চায়তের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগ দ্বারাও সমাদৃত হয়ে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘মেডিয়েশন পদ্ধতিতে একজন মেডিয়েটরের মাধ্যমেই অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। যেখানে উভয়পক্ষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা হয়। ফলে উভয়পক্ষের সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়।’

এই পদ্মতি বিচার বিভাগের ওপর থেকে মামলার চাপ কমানোর পাশাপাশি বিচারে সমতা নির্ণয়ে কাজ করে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, ‘মূলত মেডিয়েশন পদ্ধতি চালু হয় পক্ষগণের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে আদালতে মামলার চাপ ও খরচ কমিয়ে আনা এবং দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য।’

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মেডিয়েশন সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

প্রধান বিচারপতি জানান, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রেও সফলভাবে দেওয়ানী-ফৌজদারী মামলায় মেডিয়েশনের প্রয়োগ হচ্ছে। বর্তমানে নিউইয়র্কে ১০ শতাংশ দেওয়ানী মামলা বিচারের বিভিন্ন পর্যায়ে থেকেও মেডিয়েশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হচ্ছে। কানাডায় প্রায় ৮০ শতাংশ মামলা এভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াতেও মেডিয়েশনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে জোড় দেয়া হয়েছে।

আইনজীবী, বিচারক ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে মেডিয়েশনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি। কেননা, মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হলে তা বিচারের ব্যাপ্তিকে ক্ষুন্ন করে। এতে মামলার পক্ষসমূহের খরচ বেড়ে যায় এবং আদালতে মামলার জট বৃদ্ধি পেতে থাকে। মামলা জট বিচার বিভাগের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে মামলা নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পন্থা হিসেবে মেডিয়েশন ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন প্রধান বিচারপতি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির (বিমস) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী।

আরও বক্তব্য রাখেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক প্রধান বিচারপতি গীতা মিতাল, জাতিসংঘের অম্বুডসম্যান ড. কেভিন বেরি ব্রাউন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মোহাম্মদ নাজির, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জয়শ্রী সমাদ্দার ও বাংলাদেশ ইন্ডিয়া মেডিয়েটর্স ফোরামের চেয়ারম্যান জর্জ যিশু ফিদা ভিক্টর।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক মো. মজিবুর রহমান মিয়া, বিচারক জাফর আহমেদ ও আহমেদ সোহেল।

এবার বিমস-এর সহযোগিতায় কয়েক ধাপে অধস্তন আদালতের বিচারকদের মেডিয়েশন বিষয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারাদেশের বাছাই করা মোট ২৮০ জন বিচারক এ প্রশিক্ষণে অংশ নেন।

এ বিভাগের আরো খবর