গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় একটি মন্দিরের দুর্গা প্রতিমায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। মন্দির কমিটির দাবি, দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। যদিও পুলিশের ধারণা, ধূপকাঠি থেকে আগুন লাগতে পারে।
কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাঠিগ্রামের কাঠিগ্রাম সর্বজনীন কালী ও দুর্গা মন্দিরে শুক্রবার রাত ১টা থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে।
মন্দির কমিটির সভাপতি রনদা প্রসাদ মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এই মন্দিরে প্রতি বুধবার রাতে হরিসভা ও শুক্রবার রাতে গণেশ পাগলের সভা হয়। সে অনুযায়ী আমরা শুক্রবার রাতে গণেশ পাগলের সভা শেষ করে রাত ১টায় মন্দিরে তালা মেরে সবাই চলে যাই।
‘ভোরে শিখা রানী বাড়ৈ নামে এক মহিলা মন্দিরে প্রণাম করতে গিয়ে আগুন দেখে আমাদের খবর দেয়। আমরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলি। আমাদের ধারণা দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
শিখা বলেন, ‘আমি প্রতিদিনের মতো ভোরে মাকে প্রণাম করতে আসি। এসে দেখি দুর্গা মায়ের প্রতিমা মাটিতে পড়ে আছে। ওখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি সবাইকে খবর দেই।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে মন্দির প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা
এ ঘটনার পর গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আয়েশা সিদ্দিকা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস ওয়াহিদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম মন্দির পরিদর্শন করেছেন।
ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে ধূপকাঠি থেকে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ শিখা রানী যখন মন্দিরে যান তখনও দরজায় তালা দেয়া ছিল। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করা হবে। এই মন্দিরসহ উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
তবে প্রতিমা কীভাবে পড়ে গেল সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি ওসি।
মন্দির কমিটির সভাপতি রনদা প্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে শনিবার সকালে মন্দির প্রাঙ্গণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আলোচনা সভা হয়েছে।
এতে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ছাইদ শিকদার বলেন, ‘এই মন্দিরে প্রায় শত বছর ধরে দুর্গাপূজা হয়। এখানে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে। কারো মাঝে কোনো বিরোধ নেই। আমি চাই প্রশাসন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা উদঘাটন করুক।’