বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হনুমানের সেই গদা পুকুরে ফেলে দেন ইকবাল

  •    
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২১ ১৩:৫৬

কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইকবাল মণ্ডপে কোরআন রাখার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। কোরআন রাখার পর হনুমানের গদা নিয়ে তার চলে যাওয়ার দৃশ্য এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। ইকবাল গদাটি পরে একটি পুকুরে ফেলে দেন।’

কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন মণ্ডপের হনুমানের হাতের গদাটি এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ইকবালকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ।

ধর্ম অবমাননার মামলায় ইকবালসহ চারজনকে শনিবার সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। অন্য আসামিরা হলেন মণ্ডপে কোরআন পাওয়ার তথ্য ৯৯৯-এ কল করে জানানো ইকরাম হোসেন এবং নগরীর শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারের সহকারী খাদেম হুমায়ুন আহমেদ ও ফয়সাল আহমেদ। এই মাজারের মসজিদ থেকেই কোরআন নিয়ে মণ্ডপে রাখেন ইকবাল।

আরও পড়ুন: ধর্ম অবমাননার মামলায় ইকবাল রিমান্ডে

দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা।

ওই মণ্ডপের পাশাপাশি আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশ কিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।

যেখান থেকে সাম্প্রদায়িক এই সহিংসতার শুরু, সেই নানুয়ার দিঘির পাড়ের মণ্ডপে কীভাবে উত্তেজনার শুরু এবং মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ কী করে এলো, সে বিষয়ে মঙ্গলবার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা।

আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মণ্ডপে কোরআন রাখল কারা

পূজার আয়োজক, এলাকাবাসী, তদন্তকারী কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার আগের রাত আড়াইটা পর্যন্ত মন্দিরে পূজাসংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি ছিল। এরপর বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দুজন নারীভক্ত মণ্ডপে এসে হনুমানের মূর্তিতে প্রথম কোরআন শরিফটি দেখতে পান।

মণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার পর হনুমানের গদা হাতে হেঁটে যাওয়া ইকবাল

পরে বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৩টার দিকে এক ব্যক্তি কোরআন শরিফটি রেখে যান মণ্ডপে। এ সময় হনুমানের হাতের গদাটি সরিয়ে নেন তিনি। গদা হাতে তার চলে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকারই কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরায়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বেরিয়ে আসে মণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখা যুবকের নাম ইকবাল হোসেন। ৩০ বছর বয়সী ইকবাল কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের দ্বিতীয় মুরাদপুর-লস্করপুকুর এলাকার নূর আহম্মদ আলমের ছেলে। নূর আলম পেশায় মাছ ব্যবসায়ী।

কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে ৭ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ

কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ নিউজবাংলাকে শনিবার বলেন, ‘ইকবাল মণ্ডপে কোরআন রাখার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। এ মামলার চার আসামিকেই রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘মণ্ডপে কোরআন রাখার পর হনুমানের গদা নিয়ে ইকবালের চলে যাওয়ার দৃশ্য এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। ইকবাল গদাটি পরে একটি পুকুরে ফেলে দেন।’

তবে পুকুরটির অবস্থান সুনির্দিষ্ট করে জানাননি তানভীর আহমেদ।

এক প্রশ্নের জবাবে দিনি বলেন, ‘ইকবাল কোরআন রাখার পর মণ্ডপে সহিংসতার সময়েও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তার পিছনে আরও কারা আছে, আমরা খতিয়ে দেখছি।’

তিনি বলেন, ‘সহিংসতার পর ইকবাল প্রথমে কুমিল্লা থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম পৌঁছান। সেখান থেকে বিভিন্ন বাহনে করে কক্সবাজারে যান।’

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের যে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়, সেখানে শুরুতে প্রবেশে ব্যর্থ হয়েছিলেন প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন। এরপর তিনি গিয়েছিলেন ওই মণ্ডপ থেকে কিছুটা দূরে দিগম্বরীতলার গুপ্ত জগন্নাথ মন্দিরে।

মন্দিরটির গেটের তালা লাঠি দিয়ে ভাঙতে ব্যর্থ হন ইকবাল। এরপর আবার ফিরে আসেন নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে। এ সময় পূজাসংশ্লিষ্টদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তিনি কোরআন শরিফটি হনুমানের ওপর রাখেন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর কোরআন রেখে হনুমানের গদা হাতে ফিরে আসেন ইকবাল।

এ বিভাগের আরো খবর