ঘরোয়া আলোচনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ এবং শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পদে থাকবেন কি না, তা জানা যাবে ১৯ নভেম্বর।
ওই দিন বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় মেয়র জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
নিজ বাসভবনে শনিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
কাদের বলেন, ‘গাজীপুরের মেয়র ও গাজীপুর সিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ অন্যান্য আরও কিছু সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী অভিযোগ আগামী ১৯ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৪টায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় উত্থাপিত হবে।
‘সভায় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক আলোচনার পাশাপাশি দলীয় আদর্শ এবং শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্যের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে প্রদত্ত শোকজ নোটিশের ওপর আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।’
সম্প্রতি নিজ বাসায় বসে একজনের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও ফেসবুকে ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।
প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধিকার আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন গাজীপুর আওয়ামী লীগের অন্যতম এ নেতা।
গাজীপুর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে নিয়েও আপত্তিকর বক্তব্য আছে সে ভিডিওতে।
বিষয়টি পছন্দ হয়নি স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশের। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নানাভাবে ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা। ভিডিওর বক্তব্যের বিষয়ে এরই মধ্যে জাহাঙ্গীরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সংসদ। সেই নোটিশের জবাবও দিয়েছেন জাহাঙ্গীর।
শুরু থেকেই ভিডিওকে বানোয়াট বলে আসছেন জাহাঙ্গীর। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর একটি সমাবেশও করেন। পাশে তার বিরোধীদেরও অবস্থান ছিল। পুলিশ বিরোধীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার পর জাহাঙ্গীর নির্বিঘ্নে সমাবেশ করেন।
শনিবারের ব্রিফিংয়ে কুমিল্লায় মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার ইকবালকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘আপনিই (মির্জা ফখরুল) তথ্যপ্রমাণ দিয়ে বলুন, এ কয়দিন ইকবাল কোথায় ছিল?
‘ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিত হওয়া কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ইকবাল হোসেনের গ্রেপ্তারে যখন সবাই স্বস্তি প্রকাশ করছে তখন বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন তুলেছেন গ্রেপ্তার হওয়া যুবক এতদিন কোথায় ছিল? আসলে যেকোনো অর্জন বা সাফল্যকে বিতর্কিত করা বিএনপির স্বভাব। প্রতিটি বিষয়ে সন্দেহ করার বিরল প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি।’