মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেউথা-আন্দারমানিক সড়কটি সংস্কার করা হয়নি দীর্ঘদিন। এতে সড়কের পিচ উঠে পরিণত হয়েছে মেঠো রাস্তায়। গ্রীষ্মে এ সড়কে থাকে ধুলা, আর বর্ষায় কাদা। মাত্র এক কিলোমিটার সড়কটির এমন অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে লাখো মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, জেলা শহরের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম এই সড়ক। তবে সড়কটির বেহাল অবস্থায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, যোগাযোগ সহজ হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে জেলার হরিরামপুর, ঘিওর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। বাস, ট্রাক, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ছোট-বড় হাজারো যানবাহন চলে এই সড়কে।
তবে সংস্কারের অভাবে পিচঢালাই উঠে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় শত শত গর্ত তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় লুৎফর রহমান লাভলু জানান, ‘গরমের দিনে নাক-মুখ ঢাইকা কোনোমতে চলা যায়, কিন্তু বৃষ্টির দিনে চলাচল করা যায় না। রাস্তায় বাইর হইলে গাড়ির চাকার কাদা-পানিতে জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে চলাচল করা যায় আপনেই বলেন?’
আন্দারমানিক এলাকার টুটুল মিয়া জানান, ‘দীর্ঘদিন ধইরা রাস্তার মেরামত করা হই না। বেশি খারাপ হইলে মাঝেমধ্যে ইট আর সুরকি ফালায়। বৃষ্টি নামলেই রাস্তায় অ্যাক্সিডেন্ট হয়।
‘হয় গর্তে পড়ে যায়, না হয় কাদায় পিছলাইয়া যায়। মাঝেমধ্যে দেখি অটোবাইক উল্টাইয়া রইছে। বৃষ্টির দিনে রাস্তায় কম বের হই। মাইনসের বাড়ির ওপর দিয়া যাওয়া-আসা করি।’
ট্রাকচালক আবু কাদের জানান, ‘ভাইজান সারা রাস্তা ভালোই আসি। যখনই এই রাস্তায় ঢুকি মেজাজ খারাপ হইয়া যায়। খারাপের তো একটা ধরন আছে। এই রাস্তা এতই খারাপ যে, এর চাইতে খেতও ভালো। আল্লায় জানে এইখানে প্রশাসন আছে কি না।’
অটোরিকশাচালক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘অটো এমনেই ঝুঁকি। তার মধ্যে ভাঙাচোরা আর কাদার রাস্তা। মাঝেমধ্যেই গাড়ি নিয়া পইরা যাই। যাত্রীদের হাত-পা ছুইলা যায়। জামা-কাপড় নষ্ট হইয়া যায়। অনেক সময় যাত্রীরাও রাগারাগি করে। কী করুম, গাড়ি তো চালাইতে হইব।’
যাত্রী আমেনা, বিলকিস, নাজমাসহ বেশ কয়েকজন জানান, এই রাস্তায় যাতায়াত করলে শরীরের হাড় পর্যন্ত ব্যথা হয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে অনেকের ওষুধ খাওয়া লাগে। তা ছাড়া পড়ে গিয়ে মাঝেমধ্যেই আহত হতে হয়।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু মো. নাহিদ বলেন, ‘রাস্তার দুই পাশের পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে। এতে মানুষের কষ্ট হয়। নতুন একটা প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে। আশা করি, প্রজেক্টটা পাস হলে রাস্তাও সোজা হবে এবং মানুষের ভোগান্তিও কমবে।