ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ারে প্রিস্টন এলাকায় বহু বছরের পুরোনো একটি বাড়িতে বাস করেন ৪৮ বছর বয়সী ডোন কর্নেস। এ বাড়িতে তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে লুকাসও থাকে। এই মা-ছেলে মিলেই আবিষ্কার করেছেন শত বছরের পুরোনো একটি গোপন প্রেমের চিঠি।
আক্ষরিক অর্থেই এটি ছিল গোপন এক চিঠি। কারণ চিঠিটি লেখা হয়েছিল বিবাহিত এক নারীকে। আর যিনি লিখেছিলেন তিনি ছিলেন সেই নারীর গোপন প্রেমিক। চিঠির মধ্যে তাদের সম্পর্কটি বেশ ভালো করেই বোঝা যায়।
নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়- চিঠিটিকে ‘ভূতুড়ে’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ডোন কর্নেস।
তিনি জানান, তার ছেলে লুকাস নিজের কক্ষটি পরিষ্কার করছিল। কিন্তু অসাবধানতায় একটি ৫৫ ইঞ্চির টেলিভিশন মেঝেতে পড়ে যায়। এতে টেলিভিশনটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি মেঝের কয়েকটি টাইলসও ফেটে আলগা হয়ে যায়।
পরে ভাঙা টুকরাগুলো পরিষ্কার করার সময়ই একটি টাইলসের নিচে চিঠিটি পাওয়া গেছে। ফাঁক গলিয়ে চিঠিটি কেউ টাইলসের নিচে রেখে দিয়েছিলেন।
বেশ পুরোনো হলেও চিঠিটি এখনও অক্ষত। তবে প্রেসক্রিপশনের মতো টানা হাতের অক্ষরে লেখায় অনেকের পড়তে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। যেমন- বিবাহিত ওই নারীকে যিনি চিঠিটি লিখেছিলেন সেই প্রেমিকের নাম কেউ পড়ছেন রোনাল্ড হ্যাবগুড আবার কেউ পড়ছেন রোনাল্ড হ্যালগুড। চিঠিতে তিনি তার প্রেমিকাকে সম্পর্ক গোপন রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
ডোন কর্নেস চিঠিটি তার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। পোস্টের নিচে অনেকেই এই চিঠির পাঠোদ্ধার করেছেন। চিঠির বয়স নির্ণয়ে মাঠে নেমেছেন গবেষকরাও।
অনেকেই মত দিয়েছেন, চিঠিতে লেখা আছে- ‘প্রিয়তমা আমার। আমার একান্ত ইচ্ছা প্রতি সকালেই আমাকে দেখার জন্য তুমি আসো। কিন্তু দয়া করে তুমি আর আমি ছাড়া এই কথা যেন কেউ না জানে। এই সম্পর্কের কথা যদি কেউ জেনে যায় এবং দেখে যে তুমি একজন বিবাহিত নারী, তবে খুব সমস্যা হয়ে যাবে। কথাটি স্মরণে রেখো প্রিয়তমা।’
চিঠির শেষ অংশে লেখা আছে- ‘অনেক ভালোবাসি তোমাকে। আমার সঙ্গে প্রতিদিন দেখা করার প্রয়োজন নেই। যদি পারো মাঝরাতে ফুলউড ট্রাম কর্নারে এসো। তোমাকে দেখার আশায় তোমারই- রোনাল্ড।’
চিঠির মধ্যে কোনো দিন-তারিখ লেখা না থাকলেও ডোন কর্নেস জানান, বাড়িটি ১৯১৭ সালে তৈরি। আর এই বাড়ি কতজনের হাত বদল হয়েছে সে সম্পর্কেও কোনো ধারণা নেই তার।
তবে চিঠির হাতের লেখা ও কাগজটির আয়তন দেখে অনেকেই মত দিয়েছেন এটি ১৯২০ সালের দশকে লেখা।
আরেকটি সূত্র হলো- যে ট্রাম কর্নারের কথা রোনাল্ড লিখেছিলেন, সেই ট্রামলাইন শহর থেকে ৮০ বছর আগেই উধাও হয়ে গেছে।
এদিকে চিঠির পোস্টে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেছেন। ডোনকে উদ্দেশ করে একজন লিখেছেন, ‘কী দারুণ এক ইতিহাস তোমার বাড়িতে লুকিয়েছিল।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘ফেসবুকে এটাই আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর পোস্ট। কী মিষ্টি এক আবিষ্কার!’