ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন, কমিশন গঠন এবং সাম্প্রতিক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূণের দাবি করেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার বিকেল শাহবাগে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা এসব দাবি জানায়।
একই সঙ্গে দাবি পূরণে সরকারকে ২ সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এর মধ্যে দাবি পূরণ না করলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা জানান।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের নেতৃত্বে সমমনা প্রায় ২০টি সংগঠন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
পরে সন্ধ্যায় শাহবাগ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গিয়ে তাদের কর্মসূচি শেষ হয়।
এদিন বিকেল ৪টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠন করতে হবে। এজন্য সরকারকে ২ সপ্তাহের সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে সংখ্যালঘু আইন প্রণয়নের তৎপরতা না দেখলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় বরাবর পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
আইন ও কমিশন গঠন ছাড়াও অবরোধ কর্মসূচি থেকে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রতি পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়।
‘দেশব্যপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী নির্যাতন ও পূঁজারি হত্যার প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবারসহ বিভিন্ন স্লোগান দেয় অংশগ্রহণকারীরা।
বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, ‘রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর আগেও হামলায় সংখ্যালঘুরা বিচার পায়নি। হামলার নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদেরও যেন বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, শারদাঞ্জালি ফোরাম, বাংলাদেশ হিন্দু লয়ার্স অর্গানাইজেশন (বিএইচএলও), আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ, জাগো হিন্দু পরিষদ, ঢাকা ওয়ারী রবিদাস হিন্দু কল্যাণ সংঘ, ভক্ত সংঘ, হিন্দু সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম ও হিন্দু ছাত্র ফোরাম, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংরক্ষণ সমিতি, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট সংহতি জানিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় একটি মণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্গাপূজার মণ্ডপে ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজনের প্রণহানিও ঘটে।
সবশেষ রংপুরের পীরগঞ্জে একটি হিন্দু গ্রামে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।