বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষার্থীদের চুল কর্তন: ফারহানার বক্তব্য ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন

  •    
  • ২১ অক্টোবর, ২০২১ ২২:০৪

রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, ‘আমরা শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের জন্য বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও তিনি আসেননি এবং কোনো যোগাযোগ করেননি। ইতোপূর্বে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অন্যদের সঙ্গে কথা বলে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিয়েছি।’

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বক্তব্য ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে তদন্ত কমিটির কাছে নিজের বক্তব্য জানানোর কথা থাকলেও আসেননি শিক্ষক ফারহানা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তিনি না আসায় বিকেল ৫টার দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।

বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের জন্য বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও তিনি আসেননি এবং কোনো যোগাযোগ করেননি। ইতোপূর্বে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অন্যদের সঙ্গে কথা বলে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিয়েছি।’

এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও সেটি এখনও খোলা হয়নি। আগামীকাল (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় সবার সামনে এটা খোলা হবে এবং উপস্থিত সিন্ডিকেট সদস্যদের আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে তার (ফারহানা) বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে তিন দফায় তদন্ত কমিটি ডাকার পরও না এসে তিনি সময় চেয়ে বসেন। প্রথমে তাকে আর সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত না থাকলেও তিনি বার বার ইমেইলে সময়ের আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি তাকে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে আজ (বৃহিস্পতিবার) দুপুর ১টায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য নতুন সময় বেঁধে দিয়েছিল। তবুও তিনি আসেননি।

‘প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময়ের বাধ্যবাধকতা থাকায় আমরা আজ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) সিন্ডিকেট সভায় সবার সামনে সেটি উন্মোচন করা হবে। প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলে ওই সভাতেই তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

রাজধানীর ধানমন্ডিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন ভবনে শুক্রবার বিকেলে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান আব্দুল লতিফ।

এ বিষয়ে শিক্ষক ফারহানাকে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন দরজায় কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শিক্ষার্থীরা হলে ঢোকার সময় যাদের মাথার চুল হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের সামনের অংশের বেশ খানিকটা কেটে দেন তিনি। এভাবে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন ওই শিক্ষক।

ওই ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ভাইরাল হয়।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফারহানা ইয়াসমিন শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন। এর প্রতিবাদ করলে নাজমুল হাসান তুহিন নামের ১ম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের হুমকি দেন।

ওই ঘটনার পর ‘অপমান সইতে না পেরে’ তুহিন রাতে দ্বারিয়াপুরের শাহমুখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা আটকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন তার বিভাগের চেয়ারম্যান পদ, সহকারী প্রক্টর পদ ও প্রক্টরিয়াল বোর্ডের সদস্য পদ থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেন।

ঘটনার তদন্তে পরে রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর