ঝালকাঠির রাজাপুরে খড় জ্বালিয়ে মন্দিরে আগুন দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। এ ঘটনায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও মন্দিরের কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র খোয়া গেছে বলে জানানো হয়।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা নিরঞ্জন মিস্ত্রির বাড়ি রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তারাবুনিয়া গ্রামে।
নিরঞ্জনের অভিযোগ, তার বাড়ির আঙিনায় প্রতিষ্ঠিত মতুয়াদের মন্দিরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি প্রথমে দেখেন তার পুত্রবধূ মিনতী রায়। তার ডাকাডাকিতেই তারা বের হয়ে আসেন। দুর্বৃত্তরা কীর্তনের সময় ব্যবহৃত কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গেছে।
মিনতী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মন্দিরে গিয়ে দেখি তালা খোলা। ভেতরে গিয়ে পোড়া খড়কুটা দেখি। এরপর সবাইকে ডাক দিই।’
রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, ‘সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাজাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চন্দ্র শেখর হালদার মোবাইল ফোনে বিষয়টি থানায় জানিয়েছেন। তার পরপরই আমরা নিরঞ্জন মিস্ত্রির বাড়িতে আসি।
‘তবে দেশের কয়েকটি স্থানের মন্দিরে যেভাবে হামলা বা ভাঙচুর করা হয়েছে, এটা সে রকম নয়। এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, খড়কুটায় দেয়া আগুন অল্প সময়ের মধ্যেই নিভে গেছে। মন্দিরের ভেতরের একটি তক্তা সামান্য পুড়েছে। হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের ছবিসহ অন্য কোনো জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়নি।’
জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি শহিদুল।
সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের দাবি, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কেউ এই কাজ করেছে।
রাজাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সঞ্জীব বিশ্বাস বলেন, ‘এখনই বোঝা যাচ্ছে না এই কাজ কে করেছে। তবে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষ এই কাজ করেছে।’
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক জোহর আলী ও পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমীন বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা দোষীদের শাস্তির বিষয়ে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতাকে আশ্বস্ত করেন।
রাজাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও আমরা এ ঘটনায় আতঙ্কিত বোধ করছি।’