বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সামাজিক মাধ্যমে উসকানি, গুজবের তথ্য চাইল পুলিশ

  •    
  • ২০ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:৩৬

বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যেকোনো বিভ্রান্তিকর তথ্য অথবা গুজব কিংবা উসকানিতে বিভ্রান্ত বা উত্তেজিত না হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো এবং পরিস্থিতির উন্নয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য দেশের সব নাগরিকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ গুজব ছড়ালে বা উসকানিমূলক আধেয় প্রচার করলে তা জানাতে বলেছে পুলিশ। বাহিনীটি নিজেও এগুলো চিহ্নিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনাটি বিকৃত করে প্রকাশের পাশাপাশি উসকানি দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ এও বলছে, তারা সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ইন্সপেকশন) মোহাম্মদ শাহ জালাল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘটা অপ্রীতিকর ঘটনা সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য তুলে ধরা হয় এতে।

বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও উসকানি রোধকল্পে সাইবার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি রোধকল্পে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা সার্বক্ষণিকভাবে কড়া নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

এতে বলা হয়, ‘যেকোনো বিভ্রান্তিকর তথ্য অথবা গুজব কিংবা উসকানিতে বিভ্রান্ত বা উত্তেজিত না হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো এবং পরিস্থিতির উন্নয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য দেশের সব নাগরিকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।’

পুলিশ সদর দপ্তর। ফাইল ছবি

পুলিশ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক নানা সহিংসতায় দেশে সাতজন প্রাণ হারায়। তাদের দুজন হিন্দু সম্প্রদায়ের এবং পাঁচজন মুসলমান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দায়িত্ব পালনকালে ৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।

সংঘটিত এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭২টি মামলা করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

ঘটনা ও অপরাধের রহস্য উদঘাটনের জন্য থানার পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে ঘটনা-অপরাধের রহস্য উদঘাটনে প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কুমিল্লার ঘটনায় বক্তব্য

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে সাতটায় কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির উত্তর পাড়ে দর্পণ সংঘের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে মূর্তির পায়ের ওপর কে বা কারা পবিত্র কোরআন শরিফ রেখে চলে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কতিপয় স্বার্থান্বেষী দুষ্কৃতকারী উসকানিমূলক ও বিকৃত প্রচারণা চালায় এবং পরবর্তী সময়ে আরও উচ্ছৃঙ্খল দুষ্কৃতকারী সংঘবদ্ধ হয়ে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের চেষ্টা ও পূজামণ্ডপে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

দুষ্কৃতকারীরা শহরের কাপড়িয়া পট্টি কলোনির চানমনি পূজামণ্ডপ, শ্রীশ্রী রক্ষাকালী মন্দির, কালীতলাসহ আরও কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা চালায় এবং প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে, সে জন্য সারা দেশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, টহল জোরদার করা হয়েছে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয় এতে।

চাঁদপুরের ঘটনায় যে বক্তব্য

কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে গত ১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভার শ্রী ত্রিনয়নী সংঘ রাজলক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া, মোকিমাবাদ পূজামণ্ডপে ৫০০-৬০০ দুষ্কৃতকারী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

বাহিনীটি বলছে, ঠেকানোর চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে এবং ৫-৬টি পূজামণ্ডপ ভাঙচুর করে। দুষ্কৃতকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে ১৫ জন পুলিশ সদস্য মারাত্মক আহত হযন। জনগণের জানমাল রক্ষায় এবং আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় পাঁচজন প্রাণ হারান।

নোয়াখালীর ঘটনা নিয়ে বক্তব্য

কুমিল্লার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় গত ১৪ অক্টোবর বেলা ১১টা ২০ মিনিটে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ছয়ানী ইউনিয়নের সর্বজনীন শ্রীশ্রী দুর্গাপূজা মন্দিরের কাছে আট শ থেকে এক হাজার উচ্ছৃঙ্খল লোক জড়ো হয়ে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা অসংখ্য ইট, লাঠিসোঁটা নিয়ে মন্দিরের সামনে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও বিজিবির টহল দলের ওপর হামলা চালায়, মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করে এবং মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় একজন প্রাণ হারাযন এবং পরে পুকুর থেকে অপর একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

পীরগঞ্জের ঘটনার বর্ণনা

পুলিশ বলে, গত ১৭ অক্টোবর রংপুর পীরগঞ্জের বড় করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামের একজন তার ফেসবুক আইডিতে কাবা শরিফের অবমাননাকর ছবি আপলোড করে। পরবর্তী সময়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে রাত প্রায় ৮টার দিকে এলাকার কিছু দুষ্কৃতকারী ওই গ্রামের একটি মন্দিরসহ ১৮টি পরিবারের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

অন্যান্য হামলা

কক্সবাজারের পেকুয়া ও চকরিয়া, সিলেটের জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজার কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কাশিমপুরসহ দেশের আরও কয়েকটি স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

এ বিভাগের আরো খবর