উজানের ঢলের কারণে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকলেও কিছুটা কমেছে তিস্তার পানি। তবে এখনও আতঙ্কে নীলফামারীর নদীপাড়ের মানুষ, ফের কখন বেড়ে যায় পানি।
বুধবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুরের পর থেকে কমেছে পানি। উজানের পানির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নদী পাড়ের এলাকাজুড়ে।
তিস্তা নদী বেষ্টিত নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ছয়টি এবং জলঢাকা উপজেলার তিনটি নিয়ে নয়টি উপজেলার অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
চলতি বছর চারদফা বন্যার পর বুধবার হঠাৎ করে আবারও পানি বাড়ে তিস্তায়। পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে গ্রোয়িং বাঁধ, স্পার এমনকি কাঁচা-পাকা সড়কও।
ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের সাইফুর রহমান সুজন জানান, কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্টে গ্রোয়িং বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে এসেছেন। প্রাণে বাঁচার জন্য কোনো রকমে তারা বাড়ি ছেড়ে উঠেছেন বাঁধ ও উঁচু জায়গায়।
ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের ঘর বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। ভেসে গেছে অনেক ঘরবাড়ি। স্থানীয়রা কাপড় ছাড়া কিছুই সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেননি।
খালিশা চাপানি ইউনিয়নের রমজান আলী বলেন, ‘আতঙ্ক নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা নিরুপায় হয়ে গেছি। বাঁচার কোনো উপায় নেই।’
ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ‘পূর্ব খড়িবাড়িতে বালুরবাধ ভেঙ্গে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এলাকার সব ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে আমন, ভুট্টা ক্ষেত শেষ হয়ে গেছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদৌলা বলেন, ‘রেড এলার্ড জারি করা হয়েছিল তিস্তা এলাকায়। ফ্লাডবাইপাস ভেঙ্গে যাওয়ায় পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। কোথায় কোথায় ক্ষতি হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
তিনি জানান, বিকেল চারটা থেকে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তার পানি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।