চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজনের বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। বাড়িটির বাসিন্দা সেখানে মাসে এক থেকে দুই দিন থাকেন। আগুন লাগার রাতেও সেখানে ছিলেন না।
উপজেলার ৫ নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গুপ্টি গ্রামে কর্মকার বাড়িতে বুধবার প্রথম প্রহরে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ধারণা করছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। তারপরেও কারণ অনুসন্ধানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরিকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
আগুনের খবরে বুধবার ভোর ৪টার দিকে রামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসলেও তার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে স্থানীয়রা। ততক্ষণে একটি বসতঘর ও রান্নাঘর পুড়ে যায়। তবে ঘরে কেউই না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী রাজীব কর্মকার বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে বাড়ির মহিলারা প্রথমে ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় আশেপাশের লোকজন দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন কে বা কারা লাগিয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
বসত ঘরের মালিক বীরেশ্বর কর্মকার বলেন, ‘আমি চাঁদপুরের নতুন বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। মাসে দুই একবার বাড়িতে আসি। রাত চারটায় আমি বাড়িতে আগুন লাগার খবর পাই। পরে এসে দেখি আমার প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার কারও সঙ্গে আমার কোনো ধরনের বিরোধ বা মামলা নেই। কে এই ধরনের কাজ করতে পারে সে সম্পর্কেও আমার কোনো ধারণা নেই।’
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ফরিদগঞ্জ উপজেলা সভাপতি হিতেশ শর্মা মনে করেন, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে দৃর্বৃত্তরা এই ঘটনাটি ঘটাতে পারে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, ‘বসতবাড়িটিতে প্রায় ১০ বছর যাবত কেউ থাকেন না। এই এলাকায় একটি মন্দির রয়েছে। যদি নাশকতার উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে মন্দিরে ভাঙচুর করার সম্ভাবনা ছিল। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে বা অন্য কোনোভাবে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার বের করে আনা হবে।’
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’