দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে বিএনপির আয়োজনে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি সরকারের সমালোচনা করেন।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সয়াবিন তেল এক লাফে লিটারে ৭ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা হয়েছে। ওবাদুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বাজার মনিটরিং করছেন।
‘এই মনিটরিং করতে গিয়েই চালের দাম, ডালের দাম হু হু করে বাড়ছে। এটিই হচ্ছে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অপকৌশল। রংপুর পুড়ছে চৌমহন ও হাজীগঞ্জ পুড়ছে। এর মধ্য দিয়েই তিনি তার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা মনে করেন আমি চালের দাম, লবনের দাম, পেয়াজের দাম, ডালের দাম বাড়াবো, আর আমার সিন্ডিকেটরা পকেট ফোলাবে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের ময়ুরের সিংহাসন টিকে থাকবে এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার অভিপ্রায়।
‘তার সিন্ডিকেটকে সুযোগ করে দিতে তিনি জনগণের দৃষ্টি চৌমুহনীতে, হাজীগঞ্জে, চট্টগ্রাম ও পীরগঞ্জে নিয়ে গেছেন। আর ওবায়দুল কাদেরসহ অন্য মন্ত্রীদের উনি বলে রেখেছেন, তোমরা জনগণকে এগুলো নিয়ে ব্যস্ত রাখো। সেই কাজটা তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে করে যাচ্ছেন।’
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘কুমিল্লাবাসী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও বলছে তারা নিরাপত্তার জন্য জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে। বলেছিলাম। কিন্তু যথাসময়ে সাড়া না দিয়ে তারা অনেক দেরিতে এসেছে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায়ও লেখালেখি হচ্ছে। অন্যদিকে একের পর এক বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। সাড়া দেশ পুড়ছে আর তিনি ভানুর মতো শুধু দেখছেন।িউনি ভাবছেন, আমার বাড়ি আমি দেখবো না। বাংলাদেশকে নিজের জমিদারিতে পরিণত করেছেন তিনি। আবার বলছেন, তিনি না দেখলে কে দেখবেন। একটা ভয়ঙ্কর মিথ্যার ওপর দিয়ে তারা বসবাস করছেন। অন্যকে বলেছেন মিথ্যেবাদী।
‘উনি যদি আসলেই নামাজ পড়তেন, রাসুল (সা.) এর কয়েকটি বাণী যদি আয়ত্ত্ব করতেন হৃদয় দিয়ে তাহলে তিনি আজকে নিষ্ঠুর ফ্যাসিস্ট এর মত হতেন না। তিনি জালেম সরকারের প্রধান শাসক হতেন না। এটাতো উনি ধারণ করেননি। উনি ধারণ করেছেন, নির্বাচন আগে বোরকা পড়া, হাতে তজবি নেয়া, যার সবটাই ভণ্ডামি।’
রিজভী বলেন, ‘গুম-খুনের রাজনীতিতে, আজকে মিথ্যাচারের রাজনীতিতে আমরা প্রত্যেকে প্রশিক্ষিত হলে এ সরকার বেশি দিন টিকতে পারবে না। আদর্শের কাছে, ন্যায়ের কাছে, ইনসাফের কাছে, সুশাসনের কাছে, নীতির কাছে কখনোই জুলুমকারীরা টিকে থাকতে পারে না। টিকে থাকতে সরকার একটি গভীর নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে।’
ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মাদ নেছারুল হকের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু ও চিকিৎসক রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।