তিস্তায় পানি বৃদ্ধির প্রভাবে রংপুরে প্লাবিত হয়েছে নদী অববাহিকার তিন উপজেলা। এসব এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে শুরু হয়েছে মাইকিং।
স্থানীয়রা বলছেন, তিস্তা ব্যারেজের সব জলকপাট খুলে দেয়ায় গংগাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছার নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বসতঘর ও জমির ফসল। বড় বন্যার আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের বাসিন্দা হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার সকাল ৭টার দিকে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকে। এখন অনেক পানি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারণে তলিয়ে গেছে লক্ষ্মীটারী, বিনবিনা চর, মটুকপুর, চিলাখাল, সাউদপাড়া, কুড়িবিশ্বা, ইচলি, পাইকান হাজীপাড়া, মিনার বাজারসহ আরও অনেক এলাকা।
এ অবস্থায় সতর্ক থাকতে প্রচার শুরু করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে আমি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেছি।’
মানুষকে সতর্ক থাকতে মাইকে হাতে প্রচারে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী ছবি: সংগৃহীত
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ বন্যায় মানুষ এমনিতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। যাতে করে দুর্ভোগে না পড়েন সে জন্যই প্রচারে নেমেছি আমরা সার্বক্ষণিক তাদের পাশে আছি। তাদের খোঁজখবর রাখছি।’
কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু বলেন, ‘হঠাৎ এমন পানি বৃদ্ধিতে মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। ভাঙন শুরু হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। তাই আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
লক্ষ্মীটারীর মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি নাই কিছু নাই। হঠাৎ এমন করি পানি বাড়বে, ভাবতে পারি নাই। দেখি মনে হইচে বড় বন্যা হইবে। ক্ষেতের ফসল নিয়ে খুব টেনশনে আচি।’
বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার চরে আগাম আলু, ভুট্টা, সবজির ক্ষেতে পানি উঠেছে। এসব আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা চাষিদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন, ‘হঠাৎ পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর একটি অংশে পানি বাড়তে শুরু করেছে। আমরা তিস্তা অববাহিকায় লাল সংকেত দিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছি।’