এসএমএসে পাঠানো তথ্যানুযায়ী ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিতে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রবাসীরা। তারা এসে দেখেন, সরকারি ছুটি থাকায় এদিন টিকা দেয়া হচ্ছে না। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগে জানায়নি।
বুধবার সকালে টিকা নিতে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে সোহরাওয়ার্দীতে আসেন কয়েক শ প্রবাসী। তারা জানান, তাদেরকে পাঠানো এসএমএসে দেয়া তথ্যানুযায়ী সকাল ১০টায় টিকা নিতে হাসপাতালে জড়ো হন তারা। এসে দেখেন ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি, তাই টিকা দেয়া হচ্ছে না।
বিদেশগামী শ্রমিকদের দাবি, শুধু হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে টিকা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হলো তাদের। তিন সপ্তাহ আগে টিকার এসএমএস পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে নতুন কোনো এসএমএস দিয়ে জানানোও হয়নি, বুধবার ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটিতে টিকা দেয়া হবে না।
টিকা না পেয়ে বুধবার ১০টা থেকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন প্রবাসীরা। কেউ কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার এবং হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায়ও জড়ান। এসময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বেলা ১১টার দিকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ছাড়েন প্রবাসীরা।
রাজধানীর নির্ধারিত সাতটি হাসপাতালে প্রবাসীদের করোনাপ্রতিরোধী টিকা দেয়া হয়। এগুলো হলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।
এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী ছাড়া ছয়টি হাসপাতাল ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন টিকা দেয়ার কোনো কর্মসূচি রাখেনি। সেভাবেই তারা প্রবাসীদের এসএমএস পাঠিয়েছে।
সোহরাওয়ার্দীতে শেরপুর থেকে টিকা নিতে আসা মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘এসএমএস পেয়ে এত দূর থেকে টিকা দিতে এলাম। এসে দেখি টিকা দিচ্ছে না। ঢাকায় আমার কোনো আত্মীয়-স্বজনও নেই। হোটেলে থাকলেও দুই-তিন হাজার টাকার খরচার ব্যাপার।’
সালাউদ্দিনের মতো ভোগান্তির কথা জানালেন আরও অনেকে।
প্রবাসীদের ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করেছেন সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. খলিলুর রহমান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি ছিল মূলত মঙ্গলবার। ক্যালেন্ডার দেখে তিন সপ্তাহ আগে টিকার এসএমএস পাঠানো হয়েছে। সেটি পরিবর্তন হওয়ায় এসএমএস জটিলতা তৈরি হয়েছে।’
ছুটি যখন পরিবর্তন হয়েছে তখন টিকার তারিখ পরিবর্তন করে এসএমএস দিতে পারতেন কি না, এমন প্রশ্নে অদ্ভুত যুক্তি দেখালেন খলিলুর। তিনি বলেন, ‘সেটি হয়তো করা যেত, তাতে নতুন ভোগান্তি দেখা দিত। অনেকেই হয়তো এসএমএস দেখতো না। যেকারণে নতুন করে আর টিকা এসএমএস দেয়া হয়নি।’
টিকা প্রত্যাশীদের আশ্বস্ত করে খলিলুর বলেন, ‘আজ যারা টিকা নিতে এসেছেন আমরা তাদেরকে বলেছি আগামীকাল নির্দিষ্ট সময়ে টিকা নিতে আসবেন।’
আগামীকালের জন্য তো নির্ধারিত মানুষকে টিকার এসএমএস দেয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে ভোগান্তি বা জটিলতা তৈরি হবে কি-না এমন প্রশ্ন রাখা হয় হাসপাতালটির পরিচালকের কাছে।
খলিলুর বলেন, ‘আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে। একটু ভিড় হলেও সবাই টিকা পাবেন।’