পানির তোড়ে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার ধসে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি ও জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্তদের নেয়া হয়েছে পাশের আশ্রয়কেন্দ্র।
স্থানীয়রা বলছেন, বাঁধ রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
বুধবার ভোরে ফ্লাড বাইপাস বাঁধে ধস শুরু হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত ধসে যায় বাধের প্রায় ২০০ মিটার। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দিয়ে পানি ঢুক পড়ে নিম্নাঞ্চলে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা তিস্তা ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে দিয়েছে। কিন্তু বিপদ বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ বন্যা।
উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে হঠাৎ ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভারতের গজলডোবায় সব কয়টি জলকপাট খুলে দেয়ায় হু হু করে পানি বাড়ছে। তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী ও কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, মহিষখোজা, খুনিয়াগাছ, কালমাটি, গোকুন্ডাসহ নদীর নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাঘাট।
বসতঘরে পানি ঢুকে পড়ায় পরিবার নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন কেউ কেউ। নদী তীরের এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে তিস্তা পারের নিম্নাঞ্চলে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। ফ্লাড বাইপাস বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিস্তা পারের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হচ্ছে।’’
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘তিস্তার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা জেনেছি। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা পানিবন্দি মানুষের কাছে এই সহায়তা পৌঁছে দেবেন।’