বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাতে ২০০ গাছ কাটল সিটি করপোরেশন

  •    
  • ২০ অক্টোবর, ২০২১ ০২:১৬

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘ওইখানে ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সম্প্রসারণ হবে। এ জন্য কিছু গাছ কাটা প্রয়োজন। গাছ কাটার জন্য আমরা বন বিভাগকে চিঠিও দিয়েছি। তবে অনুমতি পাওয়ার আগেই সিটি করপোরেশনের কিছু লোক গাছ কেটে ফেলেছেন। এ ব্যাপারে দায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

সিলেটে সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণের জন্য রাতে ২০০ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই।

নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকার এই গাছগুলো কেটেছে খোদ সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।

সিটি করপোরেশনের কর্মীরা উপশহরের সড়কের পাশের দুই শতাধিক গাছ সোমবার রাতের কোনো এক সময় কেটে ফেলেন।

মঙ্গলবার বিকেলে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, করাত দিয়ে আরও গাছ কাটছেন শ্রমিকরা। কেটে ফেলা গাছ টুকরা করে সড়কের পাশে রাখা হয়েছে।

এরইমধ্যে কেটে ফেলা কিছু গাছ বিক্রিও করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ট্রাকে করে সেগুলো সরিয়ে নেয়া হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে গাছ কেটে অধিকাংশ বিক্রি করে ট্রাকে করে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় একটি চক্র গাছ কেনাবেচায় কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে। খবর পেয়ে বন বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে কেনাবেচার সত্যতা পেয়েছে।

বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার পাওয়া আফতাব চৌধুরী উপশহর এলাকারই বাসিন্দা। এই সড়কের পাশের গাছগুলো তিনিই রোপণ করেছিলেন।

আফতাব চৌধুরী বলেন, ‘গাছগুলোর অধিকাংশ আমার হাতে লাগানো। কোনো বাছবিচার ছাড়াই নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। যেখানে ৫০টি কাটা প্রয়োজন সেখানে ২০০ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। একেকটি গাছ এক লাখ টাকা করে বিক্রি হওয়ার মতো।’

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরে ১৫ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেন নির্মাণ ও রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। শাহজালাল উপশহর এলাকার সি ব্লকের ২১, ৩৭ ও ৩৮ নম্বর রাস্তায় সম্প্রতি ড্রেন ও রাস্তা বড় করার কাজ শুরু হয়। ওই এলাকার রাস্তার দুই পাশে রেইনট্রিসহ নানা প্রজাতির এসব গাছ ১৯৯০ সালের দিকে লাগানো হয়েছিল।

বন বিভাগের বিধিমালায় আছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন বা সরকারি জমি থেকে গাছ কাটার আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়। এরপর তদন্ত করে গাছ কাটার যৌক্তিকতা পাওয়া গেলে গাছের দরদাম নির্ধারণ ও পরবর্তী সময়ে আরও গাছ লাগানোর শর্তে গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়। এ প্রক্রিয়া বন বিভাগের মাধ্যমে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ড্রেন নির্মাণে উপশহর এলাকার কিছু গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের কাছে আবেদন করে সিসিক। তবে বন বিভাগ এখনও গাছ কাটার অনুমতি দেয়নি। অনুমোদন পাওয়ার আগেই কেটে ফেলা হয়েছে দুই শ গাছ।

বন বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপশহরে রাস্তার দুই পাশে ড্রেন নির্মাণ করতে কিছু গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে ১৭ অক্টোবর বন বিভাগকে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। পরদিন কর্মীরা সেখানে গিয়ে দেখেন গাছ কাটা হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ঠিক কী পরিমাণ গাছ কাটা হয়েছে এবং কাটা গাছগুলো কোথায় নেয়া হয়েছে, তা আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’

শ্রমিকরা না বুঝেই গাছ কেটে ফেলেন জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘ওইখানে ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সম্প্রসারণ হবে। এ জন্য কিছু গাছ কাটা প্রয়োজন। গাছ কাটার জন্য আমরা বন বিভাগকে চিঠিও দিয়েছি। তবে অনুমতি পাওয়ার আগেই সিটি করপোরেশনের কিছু লোক গাছ কেটে ফেলেছেন। এ ব্যাপারে দায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

সিটি করপোরেশন গাছ রক্ষায় খুবই আন্তরিক দাবি করে তিনি বলেন, ‘উপশহরে গাছ কাটার বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। অকারণে যেন কোনো গাছ কাটা না হয়, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াব।’

এ বিভাগের আরো খবর