রাজশাহীতে ভুয়া মামলার কাগজপত্র দেখিয়ে চিকিৎসক আজিজুল হকের কাছ থেকে ৯৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসক এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার তাদের রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নিলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর মিঠুর মোড় এলাকার তাসফিন আহমেদ ও ফয়সাল আহমেদ। এই দুই ভাই আরেক সহযোগী রুবেল সরকার রাসেলকে নিয়ে তাদের খালুর সঙ্গে প্রতারণা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আজিজুল হকের স্ত্রীর বড় বোনের ছেলে তাসফিন আহমেদ ও ফয়সাল আহমেদ। আত্মীয়তার সূত্র ধরে ৩৩ বছর বয়সী তাসফিন ও ৩৮ বছরের ফয়সাল ডা. আজিজুল হকের বাড়িতে যাওয়া-আসা করতেন।
তিনি জানান, তাসফিন, ফয়সাল ও ফয়সালের ভায়রা রুবেল ডা. আজিজুল হকের সঙ্গে প্রতারণার পরিকল্পনা করেন। একপর্যায় তারা আজিজুল হককে জানান, তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা হয়েছে। তারা আয়করের ভুয়া কাগজ দেখান। ভুয়া আরও কাগজপত্র দেখিয়ে আসামি রুবেল নিজেকে ডিবি পুলিশের ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয়ে দিয়ে গত ১৫ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে ৯৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
পুলিশ কর্মকর্তা রুহুল বলেন, ‘প্রতারক চক্রের সদস্যরা পর্যায়ক্রমে টাকা নেয়ার সময় আজিজুল হককে জানান, দুর্নীতি দমন ব্যুরো, আয়কর বিভাগ এবং হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে কাগজ বের হতে সময় লাগবে। এ বিষয়ে কাউকে কিছু না জানাতে বলেন তারা। এ ঘটনা অন্য কেউ জানলে পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বলে তারা ভয় দেখান।’
পরে আজিজুল হক খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, হাইকোর্টে দুর্নীতি ও আয়করের মামলার বিষয়টি ভুয়া। তিনি নিশ্চিত হন, আসামিরা প্রতারণা করে তার কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি ফয়সালের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে পুলিশের কাছে অস্বীকার করেন।
গত সোমবার রাজপাড়া থানায় এ বিষয়ে আজিজুল হক মামলা করেন। এর পরপরই রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে মাঠে নামে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার ভোররাতে তাসফিন ও ফয়সালকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রাজপাড়া থানার ওসি জানান, মঙ্গলবার তাদের দুজকেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। রিমান্ডের শুনানি এখনো হয়নি।