গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর কাপড়ের দোকানে আগুনকে ‘নাশকতা’ বলে অভিযোগ করছেন দোকান মালিক রমেশ চন্দ্র। গোবিন্দগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদও নাশকতার সন্দেহ করছেন। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, তদন্ত শেষে জানা যাবে আগুনের কারণ।
উপজেলার কামদিয়া বাজারের রবিন বস্ত্রালয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন লাগে। দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাতে রমেশ দোকান তালা দিয়ে বাড়িতে যান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ দোকান থেকে প্রথমে ধোঁয়া ও পরে আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
স্থানীয়রা আগুন নেভাতে ব্যর্থ হলে খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। দেড় ঘণ্টার আগুনে দোকানের সব আসবাব, মালামাল ও টাকা পুড়ে গেছে।
ব্যবসায়ী রমেশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাতে সব ঠিকঠাক ছিল। কেউ ইচ্ছা করে আগুন দিয়েছে। ভিন্ন ধর্মের লোক হওয়ায় আমার দোকানে আগুন দেয়া হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরনবী চৌধুরী বলেন, ‘খুব সকালে চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর বাসা থেকে বের হয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। রমেশ বাবুর বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’
স্থানীয় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বিপ্লব বলেন, ‘বৈদ্যুতিক কারণে আগুন লাগলে মিটার পুড়তো। পাশের ট্রান্সফরমার পুড়ত, কিন্তু সেগুলো ঠিক আছে। তার মানে আগুনের পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে।’
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গোবিন্দগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া দোকান ঘুরে দেখেছি। সেখানে শট সার্কিট বা দুর্ঘটনা থেকে আগুন লাগার কোনো আলামত দেখতে পাইনি। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত দোকানি কামদিয়া ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি হওয়ায় টার্গেটে ছিলেন। তাকে নিঃস্ব করতেই পরিকল্পিতভাবে আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে।’
ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ নিরঞ্জন সরকার বলেন, ‘আগুনের ঘটনায় দোকানির ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট বা কয়েল থেকে আগুন লাগার ধারণা করছি। তবে প্রায় দেড় ঘণ্টার আগুনের পরেও ট্রান্সমিটার ও পাশ্ববর্তী সব দোকানের মিটার অক্ষত আছে। তাই অন্য কারণও থাকতে পারে। পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমরা তদন্ত করছি।’
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। তবে তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।