বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এরা তো কিছুই জানে না, এরা ভিকটিম: আদালত

  •    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২১ ১৫:৩৪

প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে করোনা প্রণোদনার টাকা আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে যাওয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পাঁচ দিনমজুরকে জামিন দিয়েছে উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের দেয়া জামিন বহাল রেখে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এমন মন্তব্য করেছে।  

‘এরা তো কিছুই জানে না, এরা তো ভিকটিম’ মন্তব্য করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে করোনা প্রণোদনার টাকা আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে যাওয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পাঁচ দিনমজুরকে জামিন দিয়েছে উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের দেয়া জামিন বহাল রেখে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এমন মন্তব্য করেছে।

মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান দিনমজুর পাঁচজনের বিষয়ে এ মন্তব্য করেন। এতে পাঁচ দিনমজুরের জামিন বহাল থাকল।

জামিন পাওয়া পাঁচ ব্যক্তি হলেন- ফুলমনি রানী, রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায় ও নিখিল চন্দ্র বর্মন।

তাদের সবার বাড়ি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। অন্যদিকে পাঁচজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।

গত ৬ অক্টোবর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন দেয়।

ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষে।

আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, “করোনা প্রণোদনার নামে ‘প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে চার দিনমজুর কারাগারে’ শিরোনামে একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। সেসব প্রতিবেদন যুক্ত করে জামিন চেয়ে আবেদন করি। পরে শুনানি শেষে জামিন দেয়া হয় তাদের।’’

পত্রিকায় প্রকাশ হওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগে দুই সরকারি কর্মকর্তাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয় গাজীপুরের শ্রীপুরে। মামলার আসামি করা হয় কুড়িগ্রামের পাঁচ দিনমজুরকে। যার মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়।

অভিযুক্ত পাঁচ দিনমজুরের পরিবার জানায়, ‘করোনা প্রণোদনা দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করা হয়েছে। টাকা আত্মসাতের সঙ্গে তারা জড়িত নন। দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।’

ফুলবাড়ী থানা পুলিশের সহযোগিতায় গাজীপুর পুলিশ গত ২ জুলাই চার দিনমজুরকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকা আত্মসাতের চেষ্টায় ১ জুলাই শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংকের শ্রীপুর প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক।

মামলায় পাঁচ দিনমজুরসহ আসামি করা হয় শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রশিদ, হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, মাস্টাররোল কর্মচারী তানভীর ইসলাম স্বপন ও ঢাকার উত্তরখান জামতলা এলাকার বাসিন্দা শাহেনা আক্তারকে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর পাড়ের বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবাঁশ গ্রামের বাসিন্দা ওই পাঁচ দিনমজুরের পরিবার বলছে, বসতভিটা ছাড়া তাদের কোনো সম্পদ নেই। তারপরও তাদের ওপর এমন মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের মাস্টাররোল কর্মচারী কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর তানভীর ইসলাম স্বপন করোনাকালীন সরকারি প্রণোদনা পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন পাঁচ দিনমজুরকে। গত ১৬ জুন ৫ জনকে নিয়ে যান সোনালী ব্যাংকের নাগেশ্বরী শাখায়। সেখানে তাদের নামে ব্যাংক হিসাব চালু করেন। এসব দিনমজুরকে শ্রীপুরে নিয়ে গিয়ে ব্যাংকের চেক বই ও বিভিন্ন কাগজপত্রে সই ও টিপসই নেন। তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেন ব্যাংকের সব কাগজপত্র ও চেক বই। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রণোদনার টাকা পাঠানো হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

পরে একদিন গিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

পাঁচ দিনমজুরের চালু করা অ্যাকাউন্টে কিছুদিন পর ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকা চলে যায়। যার কিছুই জানতেন না তারা। তার কয়েক দিনের মধ্যেই অপরিচিত ৩-৪ জন লোক সেসব টাকা তুলে নেন। সন্দেহ হলে শ্রীপুর হেডকোয়ার্টার শাখায় যোগাযোগ করে টাকা উত্তোলন বন্ধ করে দেন ব্যাংকের ম্যানেজার।

তবে যারা টাকা তুলেছেন তাদের ধরতে পারা যায়নি বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর