শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় মানিকগঞ্জে ১০ জনকে সহায়তা দিয়েছে সদর উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চারজনকে একটি করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও বাকি ছয়জনকে দোকান করার জন্য মুদিমাল দেয়া হয়েছে।
আটিগ্রাম ইউনিয়নের কাটিগ্রাম এলাকার কাজলী বেগম বলেন, ‘আমরা তো অচলই। আমাগো বাড়িওয়ালা (স্বামী) অন্ধ, আগে ঘুইরা ঘুইরা ভিক্ষা করত। অসুখের কারণে ঘড়ে পরা। কাম-কাইজ করা পারেনা। আইজকা রিকশা পাইলাম। আমার নাতি ও মেয়ের জামাই রিকশা চালাইব। রিকশা চালায়া টাকা পয়সা দিব, সেই টাকা দিয়া সংসার চালামু।’
বন-পারিল এলাকার গোলাপজান বেগম বলেন, ‘আমাগো সে (স্বামী) বয়রা (শ্রবণশক্তি প্রতিবন্ধী)। আমারও শরীলে নানা সমস্যা। এই কারণে কাম করতে পারতাম না, ভিক্ষা কইরা দিন পার করতাম। পেটের কারণে শরম-লজ্জা না কইরা মাইনষের কাছে হাত পাতন লাগছে। সরকারের দয়া আমাগো আর মাইনষের কাছে হাত পাতন লাগবনা। মানসম্মান নিয়া চলা পারুম।’
গড়পাড়া ইউনিয়নের চর-গড়পাড়ার কবির হোসেন বলেন, ‘সারাজীবন ভিক্ষা কইরা চলছি। শেষ বয়সে আইসা ভিক্ষা করতে অইবনা, ভাবতে পারি নাই। মনে করছিলাম, ভিক্ষা করতে করতে রাস্তাত পইরা মরতে অইব। তয় আল্লায় আমাগো মুহের দিকে তাকাইছে। সরকারের দয়ায় আমাগো কেই এহন ভিক্ষুক কইবনা। আর কিছু না হইক, মরার আগে তো ভিক্ষা করতে অইলনা।’
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ভিক্ষুকমুক্ত দেশ ও জাতি গঠনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরাও সরকারের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আজ শেখ রাসেলের জন্মদিনে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের কাজ শুরু করলাম। শুরুতে দশজনকে পুনর্বাসন করা হল। আগামীতেও পুনর্বাসন করা হবে। এভাবে কাজ করলে আগামীতে ভিক্ষুকমুক্ত মানিকগঞ্জ উপহার দিতে পারব।’