বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হিন্দুদের ওপর হামলায় ভারতীয় গোয়েন্দারা, সন্দেহ নুরের

  •    
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২১ ২১:৪৮

‘আমাদের দেশের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজিপি বাংলাদেশকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেয়, তখন এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ভারতের গোয়েন্দারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না তা আমাদের ভাবিয়ে তোলে।’

দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারকে দায়ী করলেও এর পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি নুরুল হক নুর। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে তার সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নুর।

গত বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের ওপর হামলার ‘বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে’ নুরের সাবেক সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

ভারতকে কেন সন্দেহ করছেন, সে কারণ তুলে ধরে যুব অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমাদের দেশের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজিপি বাংলাদেশকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেয়, তখন এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ভারতের গোয়েন্দারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না তা আমাদের ভাবিয়ে তোলে।’

সরকারকেও দায়

এর আগে নুর এই ঘটনায় সরকারকেই দায়ী করেন। বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘রামু, নাসিরনগর, অভয়নগরসহ বিভিন্ন জায়গায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা এই সরকারের শাসনামলেই ঘটেছে। একটি ঘটনারও নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত হয়নি। এর মধ্য দিয়ে আমরা ধারণা করতে পারি, সরকার রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য এসব ঘটনা ঘটায়।’

কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার ঘটনাটি সাজানো ঘটনা দাবি করে নুরুল বলেন, ‘এই ঘটনায় কোনো হিন্দু-মুসলিম জড়িত নয়। এটির সঙ্গে দুর্বৃত্তরা জড়িত। সেই দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

‘সারা দেশ যখন দাঙ্গা–হাঙ্গামায় জ্বলছে, তখন বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে গতানুগতিক বক্তব্য দিচ্ছে। একদল অন্যদলের ওপর দায় চাপানোর এ বক্তব্য বাদ দিয়ে অতিদ্রুত বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

‘থলের বিড়াল’ বেরিয়ে আসবে তাই সরকার এসব সাম্প্রদায়িক হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করছে না বলেও অভিযোগ নুরের। বলেন, ‘নাসিরনগরের ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগে জড়িত তিনজনকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, সরকার এই অপশক্তিকে প্রশ্রয় দেয়।’

এ ঘটনার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার ওপরও জোর দেন নুর। বলেন, ‘কোনো অপশক্তি এ ঘটনাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেন ক্ষুণ্ন না করতে পারে সে জন্য প্রতিটি নাগরিককে সচেতন থাকতে হবে।’

হিন্দু শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি

পূজামণ্ডপ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবিতে শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির প্রতি সংহতিও জানান নুর।

বলেন, ‘সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করছি। যেসব মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে, সরকারি খরচে সেই মন্দিরগুলো পুনর্নির্মাণ করতে হবে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে তাদের ক্ষতির দ্বিগুণ পরিমাণ সহযোগিতা করতে হবে। শুধু লোক দেখানো তদন্ত কমিটি কিংবা ঘটনাস্থল পরিদর্শনেই যেন এ ঘটনা সীমাবদ্ধ না থাকে।’

নুর বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক দেশ। সব ধর্মের মানুষই এ দেশে সমান অধিকার ভোগ করবে। কাজেই আজকে যারা অধিকার বঞ্চিত তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সংখ্যাগুরুদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’

অন্যরা যা বললেন

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘হিন্দু-মুসলিমের সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর জন্য কুমিল্লায় ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। প্রকৃত হিন্দু-মুসলিম এই ষড়যন্ত্র করতে পারে না। যারা এটি ঘটিয়েছে, তারা সম্পূর্ণ অমানুষ ও কুলাঙ্গার। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিমে কোনো বিভেদ নেই। রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য তাদের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘যখনই দেশের জনগণ কোনো একটা বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, তখনই সরকার দেশের মানুষের মনোযোগ ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে হয়তো কোথাও আগুন লাগিয়ে দেয়, নয়তো লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটায়।

‘একইভাবে যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লাগাম ছাড়িয়ে গিয়েছে, দেশের মানুষের পেটে আগুন জ্বলছে, নিম্নবিত্ত মানুষ হাহাকার করছে, তখন তাদের সেই মনোযোগকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য মানুষের রোষানলকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার সুপরিকল্পিতভাবে এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করেছে।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন, নাট্য ও বিতর্ক সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুমও সমাবেশে বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে ‘অন্ধকার রাজনীতিকে দিশা দেখাতে’ টিএসসি থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত প্রতীকী আলোর মিছিল করে ছাত্র অধিকার পরিষদ।

এ বিভাগের আরো খবর