বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদেশে জনতা ব্যাংকের দুই এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধের সুপারিশ

  •    
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২১ ২১:২৯

প্রবাসে বাংলাদেশিরা যেন সহজে তাদের টাকা দেশে পাঠাতে পারেন এজন্য এক সময় পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোতে এক্সচেঞ্জ হাউস খোলার প্রতি আগ্রহ ছিল ব্যাংকগুলোর মধ্যে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এখন এক্সচেঞ্জ হাউস গুটিয়ে ফেলছে অনেক ব্যাংক। প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে এক্সচেঞ্জ হাউস ও ব্যাংকের শাখার সংখ্যা। গত বছর ও চলতি বছর মহামারি করোনার তাণ্ডবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশির ভাগ এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধ রয়েছে।

বছরের পর বছর লোকসানে থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানার জনতা ব্যাংকের যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির এক্সচেঞ্জ শাখা বন্ধের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স‌ঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বাৎসরিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

এমওইউর বৈঠকে খেলাপি কমানোর পাশাপাশি লোকসানি শাখাও কমিয়ে আনতে বিশেষ নির্দেশনা দেন গভর্নর ফজলে কবির।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, পর্যবেক্ষক, চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিতে পরিচালিত জনতা ব্যাংকের জনতা এক্সচেঞ্জ হাউস বছরের পর বছর লোকসান করছে। তাই এগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দুটি দেশে জনতা ব্যাংকের এক্সচেঞ্জ হাউস কেন লোকসান করছে তা দেখা হচ্ছে। কোনো সিদ্ধান্ত হলে তখন জানাতে পারব।’

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধ করা হয়েছে। আর ইতালির এক্সচেঞ্জ হাউস লোকসান থেকে লাভে আনার চেষ্টা করছি’।

প্রবাসে বাংলাদেশিরা যেন সহজে তাদের টাকা দেশে পাঠাতে পারেন এজন্য এক সময় পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোতে এক্সচেঞ্জ হাউস খোলার প্রতি আগ্রহ ছিল ব্যাংকগুলোর মধ্যে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এখন এক্সচেঞ্জ হাউস গুটিয়ে ফেলছে অনেক ব্যাংক।

প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে এক্সচেঞ্জ হাউস ও ব্যাংকের শাখার সংখ্যা। গত বছর ও চলতি বছর মহামারি করোনার তাণ্ডবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশির ভাগ এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধ রয়েছে।

২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর কার্যক্রম শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি। এটি জেইসিআই, ইউএসএ নামে পরিচিত।

কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই নিউইয়র্কে জনতা এক্সচেঞ্জ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে।

প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের খরচ মেটাতে ৫০ হাজার ডলার এবং ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী ৫ লাখ ডলার নেয়া হয়। এছাড়া স্থাপনা, সফটওয়্যার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য খরচের জন্য নেয়া হয় আরও ৩ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জন্য খরচ হয় সাড়ে ৮ লাখ ডলার বা ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হাউসটির প্রবাসী আয় ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। বিদেশে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করেও দেশে আসেনি প্রায় ১৮ কোটি টাকা- এমন তথ্য উঠে এসেছে ।

২০০২ সালের জানুয়ারিতে নিবন্ধিত হয় ইতালির জনতা এক্সচেঞ্জ। ওই বছরের জুন থেকে এর কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির রোম ও মিলানে দুটি শাখা রয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে দেশে পাঠানোই এ এক্সচেঞ্জ হাউসের মূল কাজ।

২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত লাভজনক ছিল প্রতিষ্ঠানটি। পরে আয়কর বৃদ্ধি, সীমিত নেটওয়ার্ক, নতুন অ্যান্টি মানি লন্ডারিং আইন, রেগুলেটরি ও কমপ্লায়েন্স বাবদ খরচ বাড়ানোর কারণে ২০০৯ সাল থেকে ক্রমাগত লোকসান দিয়ে আসছে।

২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১২ লাখ ৭১ হাজার ২৭১ ইউরো লোকসান করেছে। টাকার অংকে লোকসানের এ পরিমাণ ১২ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ১৯৩ টাকা।

২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৯১৬ ইউরো বা ১১ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ৭২৬ টাকা লোকসান করেছে। ৯ বছরে লোকসান ২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

লোকসানের এ ঘাটতি জনতা ব্যাংক সরাসরি নগদ অর্থ বা পুনঃভরণ দিয়ে মেটাচ্ছে। তাই বছরের পর বছর লোকসানে থাকা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো কার্যক্রম বন্ধ করতে বলেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে সংযৃক্ত আরব আমিরাতে জনতা ব্যাংকের চারটি শাখা ভালো মুনাফা করেছে।

রাষ্ট্রীয় অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের কলকাতা্ ও শিলিগুড়ি দুটি শাখা পরিচালনা করছে। শাখা দুটি ভালো মুনাফা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে সোনালীর এক্সচেঞ্জ হাউস ‘সোনালী এক্সচেঞ্জ ইনকরপোরেটেড’ এবং যুক্তরাজ্যে ফরেন সাবসিডিয়ারি কোম্পানি ‘সোনালী ব্যাংক লিমিটেড’ ২০২০ সালে ভালো মুনাফা করেছে।

সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের দুটি এক্সচেঞ্জ হাউস মুনাফায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় অগ্রণীর দুটি এক্সচেঞ্জ হাউসের কাজ বন্ধ রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর