অগ্নিকাণ্ডের শিকার রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতি মামলায় রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেমসহ চারজনের বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ সৈয়দ কামাল হোসেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর দিন ঠিক করেন।
এ আদালতের পেশকার রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার অপর তিন আসামি হলেন- রাজউকের ইজারা গ্রহীতা সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক, রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বর্তমান চেয়ারম্যান) লিয়াকত আলী খান মুকুল ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলি সাইদুর রহমান।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলাবিশিষ্ট এফআর টাওয়ার নির্মাণ করেছেন। ১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন পান এসএমএইচআই ফারুক। পরে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন চেয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন তিনি।
সংশোধিত নকশাটি ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী না হওয়ায় এবং প্রস্তাবিত ভবনের উচ্চতা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তার এক মাসের মধ্যেই সংশোধন করে সেই নকশা অনুমোদন করা হয়। এ কাজে অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।
পরে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক চুক্তিবদ্ধ হন আবাসন প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের সঙ্গে। রূপায়ন ওই জায়গায় অবৈধ নকশার ভিত্তিতেই ১৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে ভবনের দুই পাশে যে পরিমাণ জায়গা রাখার কথা ছিল, তা-ও রাখা হয়নি।
পার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও উল্লেখিত নির্দিষ্ট পরিমাণের স্থানে রাখা হয় এক-তৃতীয়াংশ জায়গা। আবাসিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেয়া হলেও পুরো ভবনটি ব্যবহার হয় বাণিজ্যিক হিসেবে।
পাঁচ আসামির মধ্যে সাবেক অথরাইজড অফিসার সৈয়দ মকবুল আহমেদ মারা যাওয়ায় তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারক।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে।