প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় এমন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান তিনি যেখানে থাকবে না কোনো অবিচার, থাকবে না কোনো অন্যায়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোমবার শেখ রাসেল দিবস ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদেশটা আমাদের। এদেশটা আমরা গড়ে তুলতে চাই একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায়। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই, যে দেশে কোনো অন্যায় থাকবে না; অবিচার থাকবে না। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে।’
দেশের প্রতিটি শিশুর জীবন অর্থবহ করে তোলা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, শেখ রাসেলের মতো আর কোনো শিশুকে যেন অকালে প্রাণ দিতে না হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশে প্রত্যেক শিশুর জীবন অর্থবহ হবে। এভাবে অকালে ঝড়ে যাবে এটা চাই না। বাংলাদেশে যাতে এ ধরনের আর কোনো ঘটনা না ঘটে। আমাদের দেশের শিশুরা একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বেড়ে উঠবে। প্রতিভা বিকশিত হোক।
‘ঘাতকের বুলেটে আর কোনো শিশুকে যেন জীবন দিতে না হয়। আমি সমগ্র জাতির কাছে এ আহ্বানই জানাবো, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাদের নিরাপত্তা দেয়া, ভালোবাসা দেয়া, তাদের সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এবং তাদের জীবনকে স্বার্থক করা, অর্থবহ করা যেন সবার আকাঙ্ক্ষা হয়।’
এ সময় শিশুদেরকে মন দিয়ে পড়াশোনা করার উপদেশও দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘শিশুদের এটুকু বলব, তোমরা মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে। কারণ, শিক্ষা এমন একটা সম্পদ যেটা কখন কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। অন্য যেকোনো সম্পদ চুরি হতে পারে, হারিয়ে যেতে পারে, কিন্তু শিক্ষা এমন একটা সম্পদ যেটা কখনো হারাবে না।
‘শিক্ষাটাই সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমি জানি করোনার সময় শিশুরা স্কুলে যেতে পারেনি। লেখাপড়া বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এখন করোনা যেহেতু আমাদের নিয়ন্ত্রণে আমরা স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি খুলে দিচ্ছি।’
১৯৬৪ সালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে জন্ম নেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ছোট শিশুটিকেও। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাসেলের বয়স তখন ছিল মাত্র ১০ বছর।
নির্মম সেই হত্যাকাণ্ডের ৪৬ বছর পর চলতি বছরের ২৩ আগস্ট মন্ত্রিসভা বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ রাসেলের জন্মদিনকে জাতীয় দিবসের স্বীকৃতি দেয়া হয়। মন্ত্রিসভা বৈঠকে ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্মদিনটি ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে জাতীয়ভাবে পালনের অনুমোদন পায়।
দিনটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করে জাতীয়ভাবে পালন করার নির্দেশ দেয়া হয় মন্ত্রিসভা থেকে। দিবসটি জাতীয়ভাবে পালনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সে হিসেবে এবারই প্রথম দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে।