কুমিল্লার ঘটনার জেরে দেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, মণ্ডপ ও বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার একটি মন্দিরেও হামলার চেষ্টা চালানো হয়।
শতাধিক লোক জড়ো হয়ে মেজরটিলার নুরপুর এলাকার শ্যামসুন্দর মন্দিরে হামলার চেষ্টা করে। পরে নুরপুরসহ আশপাশের কয়েকটি মন্দিরের পাশে অবস্থান নেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কর্মীরা।
হামলা ঠেকাতে রাত জেগে মন্দির পাহারা দেন তারা। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের অভয়ও দেন নেতারা।
অস্থিতিশীল এমন পরিস্থিতিতে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের এমন উদ্যোগে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা। আর ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, যখনই কোনো মন্দির বা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলাচেষ্টার খবর পাবেন সঙ্গে সঙ্গেই তারা সেখানে গিয়ে হামলাকারীদের প্রতিহত করবেন। রক্ষা করবেন মন্দির ও বাড়িঘর।
ছাত্রলীগ নেতারা জানান, হামলা হতে পারে- এমন খবর পেয়ে রোববার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সিলেটের গেপালটিলা মন্দির, নুরপুর শিবসুন্দর মন্দির, বালুচরের দুর্গাবাড়ী মন্দির এবং ওই এলাকার একটি আখড়া পাহারা দেয়া হয়। এ সময় ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে বৈঠকে অভয় দেন ছাত্রলীগ নেতারা
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস চলছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চলছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কাল রাত থেকে এই তাণ্ডবকারীদের প্রতিহত করার জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। এখন থেকে এদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকব।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত রাতে রংপুরের বস্তিতে আগুন দেয়ার পরপরই জানতে পারি মেজরটিলার শ্যামসুন্দর মন্দিরে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে একদল লোক। সঙ্গে সঙ্গেই আমি দলীয় নেতা-কর্মীদের আশপাশের সব মন্দিরে পাহারা দেয়ার নির্দেশ দিই।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের এ ধরনের ঘটনা প্রতিহত করার নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে নাজমুল বলেন, ‘আমরা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কোথাও যদি হামলার আশঙ্কা দেখা যায়, সেখানেই আমাদের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহযোগিতা করবে।’
দেশে চলমান সহিংসতার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শান্তির পতাকা মিছিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখতে হলে প্রয়োজন অসাম্প্রদায়িক শক্তির ঐক্য। ছাত্রলীগের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার এবং এই সময়ে তা আরও বড় পরিসরে প্রয়োজন। আওয়ামী লীগের সব অঙ্গসংগঠন ও অন্যান্য প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল-ব্যক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন প্রয়োজন।’