দেশের বিভিন্ন জেলার পূজামণ্ডপে হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবিসহ ৭ দফা মানতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে শাহবাগ মোড়ের অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, জনদুর্ভোগ কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রোববার বেলা সোয়া ২টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলকারীরা।
অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দেব দত্ত জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টার মধ্যে দাবির পক্ষে কোনো আশ্বাস না আসলে আবার আন্দোলনে যাবেন তারা।
তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি না মেনে নেন তাহলে আবার আন্দোলনে যাব। আর এর মধ্যে যদি আবার কোনো মন্দিরে হামলা চালানো হয় তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেব।’
অবরোধ প্রত্যাহারে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে পল্টন, সায়েন্সল্যাব, বাংলামটর ও টিএসসি অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা টিএসসি এলাকায় জড়ো হন। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসেন।
অবরোধে যোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল শাহ বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশের মানুষ। সকলের শরীরে একই রক্ত প্রবাহিত হয়। তাহলে এ ধর্মীয় উন্মাদনা কেন? সরকারের প্রতি আমাদের দাবি, এই সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ করতে হবে। দ্রুত হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
‘আমরা রোহিঙ্গা নই, আমরা বাংলাদেশি। আমরা আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের অধিকার রাখি। আমাদের এই অধিকারে যারা হাত দিয়েছে, তাদের হাত আমরা ভেঙে দেব। আমরা এভাবে রাস্তা অবরোধ করতে চাইনি, কিন্তু আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। যারা আমাদের কারণে যানজটে পড়ে আছেন, তাদের কাছে আমরা ক্ষমা চাই।’
মোড়ে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা ‘সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় করতে হবে’, ‘মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’সহ নানা স্লোগান দেন।
৭ দফা
০১. হামলার শিকার মন্দিরগুলো প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।
০২. বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ক্ষতিপূরণ।
০৩. ধর্ষণ ও হত্যার শিকার পরিবারগুলোকে স্থায়ী ক্ষতিপূরণ।
০৪. দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
০৫. জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে সাম্প্রদায়িক হামলার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।
০৬. সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের আধুনিকায়ন করে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা।
০৭. জাতীয় বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জিডিপির ১৫% বরাদ্দ রাখা।