বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে, তবে ‘সৈকতে ঘোরার সময় আসেনি’

  •    
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:১৭

আইইডিসিআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যদি এখন থেকে পদক্ষেপ না নেই তাহলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও আবার সংক্রমণ বাড়বে। এজন্য টিকা নিলেও আমাদের মাস্ক পরতে হবে। সেই সঙ্গে জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে না যাওয়ায় ভালো। আমরা লক্ষ্য করছি অনেক মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ করছে। তবে সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’

দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দেশে সংক্রমণের হার টানা ২৬ দিন ৫ শতাংশে নিচে। চলতি বছরের জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখছে দেশ। আগস্টের শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে। সেপ্টেম্বরেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। চলতি মাসেও কমতির দিকে।

সর্বোপরি করোনা পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক। তবে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই বলে মনে করেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর।

সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি ও টিকাদান কর্মসূচির সার্বিক বিষয়ে নিউজবাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দেশে সংক্রমণ তো কমে এসেছে। মানুষ তো অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহাও দেখা যাচ্ছে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখা। এজন্য সব ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি চলমান রাখতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি মানতে সারা দেশে যে ক্যাম্পেইন চলমান রয়েছে, এটি বাড়াতে হবে। সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি চলমান থাকবে।

ইতোমধ্যে ৫ কোটি মানুষকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। সংক্রমণ কমানোর জন্য এটি একটি বড় ভূমিকা পালন করবে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যদি এখন থেকে পদক্ষেপ না নেই তাহলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও আবার সংক্রমণ বাড়বে। এজন্য টিকা নিলেও আমাদের মাস্ক পরতে হবে। সেই সঙ্গে জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে না যাওয়া ভালো।

আমরা লক্ষ্য করছি অনেক মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ করছে। তবে সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে ব্যক্তিগত সচেতনতা বেশি ভূমিকা পালন করে। আমি যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি আমার পরিবার সুস্থ থাকবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছি। এখন সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখানে যেন আমরা অসর্তক না হই।

যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলি, তাহলে বাচ্চারা করোনা আক্রান্ত হবে। তাদের মাধ্যমে বয়স্করা করোনা আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে।

এখন যেভাবে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের বসানো হচ্ছে আগামীতেও এটি অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর কোথাও কোথাও সংক্রমণ অনেক গুণ বেড়েছে। সেখানে হয়ত স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি বা শিক্ষা কর্মকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টরা টিকা নেননি। এই কারণে বাচ্চাদের টিকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বুস্টার ডোজ নিয়ে কী পরিকল্পনা?

এ বিষয়ে এখনও বিশ্বের কোনো দেশের পরিষ্কার কোনো ধারণা নেই। এ বিষয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। যদি কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় গবেষণা হয়, সেখানে দেখা গেছে টিকা বাণিজ্যের কারণে বুস্টার ডোজ দেয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে স্বাধীনভাবে যে গবেষণা হয়েছে, তার কোথাও বুস্টার ডোজ দেয়ার সুপারিশ করা হয়নি।

যদি সারা পৃথিবীর মানুষের দুই টিকা দেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও সংক্রমণ ছড়াতে থাকবে। সো বুস্টার ডোজের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ সবাইকে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া উচিত।

অনেক দেশ শুধুমাত্র একটি ডোজ দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। দুই-তিনটা দেশে বুস্টার ডোজ দেয়া হচ্ছে। তবে এটি বাণিজ্যিক স্বার্থে করা হয়েছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর

মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ ভ্যাসসিনেশনের, অর্থাৎ প্রথম ডোজ এক কোম্পানির এবং দ্বিতীয় ডোজ অন্য কোম্পানির দেয়ার বিষয়ে কী ভাবছে সরকার?

কোনো প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর যদি একই কোম্পানির দ্বিতীয় ডোজের টিকা না পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আরেকটি কোম্পানির টিকা বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। আমরা বড় পরিসরে একটি গবেষণার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশজুড়ে গবেষণার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

করোনার নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট আসার শঙ্কা করছেন কি?

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে। প্রথমে করোনাভাইরাস উহান শহরে যে ভ্যারিয়েন্ট ধরা পরে সেটি ইতালিতে এসে রূপ পরিবর্তন করে। এই ভ্যারিয়েন্ট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়েছে।

এ কারণে ভারত কিংবা ইউকে ভ্যারিয়েন্ট আসতে হবে না। দেশীয় ভ্যারিয়েন্টে রূপ পরিবর্তন করে নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করতে পারে। যে দেশ অনেক বেশি জিনোম সিকোয়েন্সিং করবে তারা হয়ত বেশি নতুন ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কার করবে। তখন হয়ত তাদের দেশের নামে এটির নামকরণ করা হবে।

এখন আমরা অনেক বেশি জিনোম সিকোয়েন্সিং করছি। ভাইরাসের রূপ পরিবর্তন হলে আমরা জানতে পারব।

এ বিভাগের আরো খবর