গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে প্রকল্প ছাড়াই ভূমি হস্তান্তর কর বরাদ্দের তুলে নেয়া সেই সাড়ে ১৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন ৩ নম্বর দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার পর উন্নয়ন প্রকল্পে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি হস্তান্তর কর (১ শতাংশ) বরাদ্দের ব্যাংক হিসাব নম্বরে এই টাকা জমা করেন চেয়ারম্যান। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভ্যাট ও আয়কর হিসেবে ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকাও জমা করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে।
এ ছাড়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের এই চেয়ারম্যান ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি সচিব নুরজামান মিয়া।
রোববার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রোকসানা বেগম।
নিউজবাংলাকে ইউএনও বলেন, ‘শোকজের লিখিত জবাব গত বৃহস্পতিবার আমার দপ্তরে জমা পড়েছে। শোকজের জবাব গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রোখছানা বেগমের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া উত্তোলন করা সাড়ে ১৮ লাখ টাকা ও আয়কর বাবদ আড়াই লাখ টাকা জমার কথা জানিয়েছেন তিনি।’
এর আগে ‘প্রকল্পের নেই খোঁজ, চেয়ারম্যানের ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন’-শিরোনামে ১০ অক্টোবর নিউজবাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সরকারি বরাদ্দের টাকা গোপনে তুলে নেয়ার ওই ঘটনায় পরিষদের মেম্বারসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝেও ক্ষোভ দেখা দেয়।
প্রকল্প ছাড়াই টাকা তোলার ঘটনাটি ধরা পড়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনে নথিপত্র যাচাইয়ে। এতে প্রকল্প ছাড়াই সাড়ে ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ভ্যাট ও আয়কর হিসেবে ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা জমা না দেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।
ওই ঘটনার পর চেয়ারম্যান সাজেদুলকে ২৯ সেপ্টেম্বর কারণ দর্শানোর নোটিশে (শোকজ) এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব দেয়ার নির্দেশ দেন গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রোখছানা বেগম।
সেই নোটিশের পর ৩ অক্টোবর ভ্যাট ও আয়করের ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৩ টাকা এবং ৬ অক্টোবর ভূমি হস্তান্তর কর বরাদ্দের তুলে নেওয়া সাড়ে ১৮ লাখ টাকা পরিষদের ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়।
ইউপি সচিব মো. নুরজামান মিয়া বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক সাদুল্লাপুর শাখার হিসাব নম্বরে এসব টাকা জমার রশিদ এবং ট্রেজারি চালানের কপি ইউএনওসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।’
তার দাবি, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েল, স্প্রে মেশিন বিতরণ ও কালভার্টসহ উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কাজগুলোও হচ্ছে ভূমি হস্তান্তর কর বরাদ্দের টাকায়। এ কারণে জমা দেয়ার পর ওই টাকা ফের তুলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রোখছানা বেগম জানান, চেয়ারম্যান স্বাধীনের লিখিত জবাব ইউএনওর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। তার জবাব পর্যালোচনা করাসহ সরেজমিনে অভিযোগগুলো তদন্ত করেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।