বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোবিন্দ প্রামাণিকের অভিযোগের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ২২:০৯

গোবিন্দ প্রামাণিকের ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লায়ও চলছে আলোচনা। এমন অভিযোগ অস্বীকার করছেন এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আর হিন্দুনেতারা বলছেন, এ ধরনের কোনো বক্তব্য তারা গোবিন্দ প্রামাণিকের কাছে দেননি।

কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া এবং এর জের ধরে সহিংসতার পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দায়ী থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিক।

অনলাইনভিত্তিক একটি টক শোতে শনিবার রাতে তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা তাকে বলেছেন, কুমিল্লা সদর আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে।

গোবিন্দ প্রামাণিকের ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লায়ও চলছে আলোচনা। এমন অভিযোগ অস্বীকার করছেন এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আর হিন্দুনেতারা বলছেন, এ ধরনের কোনো বক্তব্য তারা গোবিন্দ প্রামাণিকের কাছে দেননি।

অনলাইন ওই টক শোতে গোবিন্দ প্রামাণিক ছাড়াও কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মোল্লা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর অংশ নেন।

গোবিন্দ প্রামাণিকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার সকালে ঘটনার পর দিনভর সহিংসতা হয়। পরদিন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন কুমিল্লায় আসেন। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হিন্দুনেতাদের সঙ্গে কথা বলেন ডিআইজি আনোয়ার হোসেন।

‘আমরা জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় হিন্দু মহাজোটের কুমিল্লার নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। সভা চলাকালে হঠাৎ উপস্থিত হন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিক। তবে তার সঙ্গে আমাদের কোনো কথা হয়নি।’

কুমিল্লা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাশ টিটু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হিন্দু মহাজোট আলাদা সংগঠন। কেন কীভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে হিন্দু মহাজোটের কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের সঙ্গে কোনো কথাই বলেননি। তারা কথা বলেছেন হিন্দু মহাজোটের জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে।’

হিন্দু মহাজোটের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক ও কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মানিক ভৌমিকও বলছেন, এমন কোনো অভিযোগ তারা গোবিন্দ প্রামাণিককে জানাননি।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে কুমিল্লায় সহিংসতা হয়েছে, এটা আমরা কখনোই বলিনি। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিক বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

‘পরে গোবিন্দ প্রামাণিককে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাই। সেখানে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক হয়। সেখানে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে কোনো কথা হয়নি।’

টক শোতে গোবিন্দ প্রামাণিকের তোলা অভিযোগের বিষয়ে মানিক ভৌমিক বলেন, ‘যদি উনি এমন কথা বলেন তাহলে সেটা ওনার বিষয়। কারণ কুমিল্লার বাটি চালান দিয়েও একটি মানুষ পাওয়া যাবে না যে বলবে মেয়র ও এমপির দ্বন্দ্ব রয়েছে। এটা হাস্যকর কথা।

‘তবে আমাদের নেতা গোবিন্দ প্রামাণিক ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাদের সঙ্গে কী কথা বলেছেন, সেটা আমরা জানি না।’

সংগঠনটির কুমিল্লার সহসভাপতি অ্যাডভোকেট স্বর্ণকমল নন্দীও একই মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লার ঠাকুরপাড়া এলাকার কালীগাছতলার বাসিন্দা অশোক রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের জানামতে এটা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে হয়নি। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তৃতীয় কোনো পক্ষ এ কাজটা করেছে।’

ছাতিপট্টি রক্ষাকালী মন্দিরের আশপাশের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও মনে করছেন, রাজনৈতিক কারণে এমন হামলা হয়নি। মেয়র ও এমপির সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের বলেও তারা দাবি করেন।

কী বলছেন এমপি-মেয়র

ধর্মীয় সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার দাবিও করেছেন তিনি।

সাক্কু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার সময় এমপি সাব ছিলেন হজে, আমি ছিলাম কুমিল্লায়। মানুষ মুখ দিয়া কত কথা কয়, কিন্তু কেউ প্রমাণ দিতে পারবে?’

টক শোটি দেখেননি জানিয়ে সাক্কু বলেন, ‘আমার সঙ্গে এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। আমি বিএনপির রাজনীতি করলেও আওয়ামী লীগের এমপির সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। এ কারণে অনেকে আমাকে কটাক্ষও করেন।’

সাক্কু মনে করেন, ভালো সম্পর্ক না থাকলে এলাকায় উন্নয়নকাজ করা সম্ভব না। তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রতিটি কাজ আমি এমপির সঙ্গে পরামর্শ করেই করি। কাজেই যারা এমন বক্তব্য দেয়, সেগুলো তাদের নিজস্ব বিষয়।’

অন্যদিকে কুমিল্লা সদর আসনে আওয়ামী লীগের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আগামীকাল সোমবার বিকেলে গণজমায়েতের আয়োজন করা হয়েছে। সেই জমায়েতেই টক শোর ওই মন্তব্যের জবাব দেয়া হবে।’

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিকের মন্তব্যও জানতে চেয়েছে নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘আমাকে অনেকে রোববার সকালে ফোন করে এমপির সঙ্গে মেয়রের সুসম্পর্কের কথা জানিয়েছেন। তবে আমি বলব এমপি অনেক প্রভাবশালী। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক ছিল।’

এ বিভাগের আরো খবর