বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাদ্রাসার নিচে বিস্ফোরণ রহস্যে ঘেরা

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ২০:২৯

চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানা এলাকার বালুচরা কাশেম কলোনিতে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিস্ফোরণে একজন নিহত ও দুইজন দগ্ধ হয়েছেন। কলোনি নামে পরিচিত হলেও তিনতলা ভবনটির ওপরের অংশ ব্যবহার হয় মসজিদ ও মাদ্রাসা হিসেবে। নিচতলায় কয়েকটি ঘরে ভাড়া থাকেন শ্রমিকরা। সামনের অংশে রয়েছে দোকান।

বিকট শব্দে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন শ্রমিক দিদার হোসেন। দেখেন বিস্ফোরণে ধসে পড়েছে তার ঘরের দেয়াল। ছিটকে পড়া ইটের আঘাতে আহত হন তিনি। জানতে পারেন পাশের ঘরে ঘটেছে বিস্ফোরণ। মারা গেছেন একজন, দগ্ধ দুজন। তবে দিনভর অনুসন্ধানে এ বিস্ফোরণের রহস্য ভেদ করতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

নির্মাণশ্রমিক দিদার থাকেন চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানা এলাকার বালুচরা কাশেম কলোনিতে। সেখানেই রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিস্ফোরণে একজন নিহত ও দুইজন দগ্ধ হয়েছেন। তিনতলা ভবনের ওপরের অংশ ব্যবহার হয় মসজিদ ও মাদ্রাসা হিসেবে। নিচতলায় কয়েকটি ঘরে ভাড়া থাকেন শ্রমিকরা। তাদেরই একজন দিদার।

এ ঘটনায় আহত দিদার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘুমের ভেতর হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি, তারপর চোখ খুলে দেখি সবকিছু আমার গায়ের ওপর পড়ছে। আমার স্ত্রী ও সন্তান ছিল খাটে, আমি মেঝেতে। ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়েছে, ওপাশে আগুন জ্বলতেছে। বেরিয়ে দেখি দেয়ালের নিচে চাপাপড়া একজনের মাথা ও শরীর থেকে রক্ত পড়ছে।’

‘ততক্ষণে আগুনে পোড়া দুজনকে বের করা হয়েছে। পরে শুনছি দেয়াল চাপাপড়া লোকটা মারা গেছেন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নিভিয়েছেন ৷’

বিস্ফোরণে ধসে পড়া দেয়ালচাপায় নিহত হন একজন। ছবি: নিউজবাংলা

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মুখলেসুর রহমান, এডিসি আরাফাতুন ইসলাম ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার রওনকুল ইসলাম। বিস্ফোরণের কারণ নিশ্চিত হতে পারেননি তাদের কেউ।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিস্ফোরণের কারণ বের করা যায়নি। স্থানীয়রা বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি করলেও বিষয়টি নিশ্চিত না। যে দুটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার কোনোটিতেই গ্যাস সিলিন্ডার ছিল না। সেখানে যে গ্যাসলাইন, তা ঠিক আছে।’

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার রওনকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গ্যাস লাইনগুলো চেক করেছি, সব ঠিক আছে। যে দুটো ঘরে বিস্ফোরণের কথা বলা হচ্ছে সেখানেও গ্যাসলাইন অক্ষত। গ্যাসের সংযোগ লাইনে একটি ছিদ্র থাকলেও তা সাবান দিয়ে বন্ধ করা ছিল। এটার সঙ্গে বিস্ফোরণের সম্পর্ক আছে বলে মনে হচ্ছে না।’

রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বালুচরা এলাকার তুফানী রোডের ‘হাজী কাশেম কলোনি’ নামের ভবনটিতে তৃতীয় তলায় মাদ্রাসা, দ্বিতীয় তলায় মসজিদ। নিচতলায় কয়েকজন ভাড়া থাকেন।

বিস্ফোরণে বাইরের একটা দেয়াল ছাড়াও দুই ঘরের মাঝের দেয়াল ধসে পড়েছে। দগ্ধ দুজন ছিলেন তৃতীয় ঘরের বাসিন্দা, আর অপেক্ষাকৃত কম আহত দিদার ছিলেন দ্বিতীয় ঘরে।

ভবনমালিক প্রয়াত হাজি কাশেমের ছেলে কুবসুর আলম জানান, নিচতলার একটি ঘরে ফ্যামিলি থাকলেও অন্য ঘরে শ্রমিকরা থাকেন মেসের মতো করে।

ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি বাসায় ছিলাম। কলোনি থেকে পূর্ব দিকে আমার বাসা। খবর পেয়ে ছুটে আসি। কয়েকজন জানালেন বিস্ফোরণ হয়েছে। কিন্তু তা কীভাবে হয়েছে বুঝতে পারছি না। যে ঘরে বিস্ফোরণের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ৫ জন থাকেন, তারা সবাই নির্মাণশ্রমিক। তিনজন কাজে গিয়েছেন, দুজন ছিলেন তারা দগ্ধ হয়েছেন। তারা প্রায় ১৫ বছর ধরে এ ঘরে আছেন।’

মাদ্রাসা ও মসজিদের নিচে যেসব ঘরে লোকজন ভাড়া থাকেন সেখানে রয়েছে আরেকটা কলোনিতে যাওয়ার পথ। সেই পথের মাঝেই দেয়ালচাপায় নিহত হন মো. ফারুক নামের শ্রমিক। তিনি খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বদিউল আলমের ছেলে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আবুল কালাম ও মো. ফোরকানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

এ বিভাগের আরো খবর