‘বাড়িতে পুরুষ বলতে যারা থাকার কথা তারা তো নেই। খুন হয়েছেন তিনজন। তাদের ছেলেরা চাকরি করেন। বাড়িতে এসে শোকে পাথর হয়ে আছেন। যারা বাড়িতে থাকতেন, আমার ভাসুরের ছেলেরা; তারা সবাই ঘটনার দিন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপ খেয়ে ঢাকা-ফরিদপুরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কে মামলা করবে তা এখনো ঠিক হয়নি। তবে আমরা বিচার চাই।’
কথাগুলো মোবাইল ফোনে বলছিলেন মিলিনা বেগম। তিনি সম্প্রতি খুন হওয়া সবুর মোল্লার স্ত্রী।
মাগুরা সদরের জগদল ইউনিয়নে গত শুক্রবার ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন সবুর মোল্লা, তার ভাই কবির মোল্লা ও চাচাতো ভাই রহমান মোল্লা।
শুক্রবার ঘটনার পর শনিবার মাগুরা সদর হাসপাতালে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেয়া হয়। রাতে দাফন করা হয় নিজ নিজ এলাকায়।
দুই দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
মিলিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। সে বাড়ি এসেছে। সে বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। আমার স্বামীসহ স্বজন হারানোর বিচার চাই।’
হাসপাতালে ভর্তিদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পুরুষ কেউ বাড়িতে না ফিরলে মামলা করতেও পারছেন না বলে জানান মিলিনা বেগম।
তিনি বলেন, ‘মাগুরার পুলিশ বলছে মামলা করতে। আমরা তো অসহায়। মামলা করার মতো এখন লোক নেই। সবাই ঘটনার দিন থেকে আহত।’
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মামুন হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, জগদলের ঘটনায় যে চারজন নিহত হয়েছেন, সেখানে মূলত দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে। সেখানে ছিল সবুর মাতবর ও নজরুল মেম্বার গ্রুপ।
‘ঘটনায় নিহত ৪ নং ওয়ার্ডের সবুর মোল্লা, তার ভাই কবির মোল্লা ও চাচাতো ভাই রহমান। অন্যদিকে ইমরান নামে যে যুবক নিহত হয়েছেন তিনি মূলত ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং মেম্বার নজরুলের সমর্থক বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
মামলা করার জন্য পুলিশ পরিবারগুলোকে জানালেও তারা এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। তবে মামলা হবে বলেও জানান তিনি।
মামুন হোসেন বলেন, ঘটনার দিন রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করায় তাদের নাম-পরিচয় জানানো হচ্ছে না।