বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমানবন্দরে ছিনতাইকারীদের টার্গেটে প্রবাসীরা

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:২৮

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীর উত্তরায় বিমানবন্দরে প্রবাসীদের টার্গেট করে অর্ধশতাধিক ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে মাত্র সাতটি। স্বল্প সময়ের জন্য এসে দ্রুত বিদেশ ফিরে যাওয়ার তাড়া থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা ঝামেলা মনে করে মামলা করছেন না।

রাজধানীর বিমানবন্দরকেন্দ্রিক দুটি ডাকাতির ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ।

রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন মীরবাগ এলাকা থেকে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. মাসুদুল হক আপেল, আমির হোসেন হাওলাদার ও মো. শামীম।

এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি পাসপোর্ট, দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র, দুটি এটিএম কার্ড, একটি আইপ্যাড, একটি ওয়ার্ক পারমিট কার্ড, একটি বিএমইটি কার্ড, একটি অফিস আইডি কার্ড, একটি স্টিলের চাকু ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, রাজধানীর উত্তরায় বিমানবন্দরে প্রবাসীদের টার্গেট করে অর্ধশতাধিক ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে মাত্র সাতটি।

স্বল্প সময়ের জন্য এসে দ্রুত বিদেশ ফিরে যাওয়ার তাড়া থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা ঝামেলা মনে করে মামলা করছেন না বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর মো. লিটন সরকার দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মিশর থেকে টার্কিশ এয়ারলাইনসে করে দেশে আসেন। তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে গোলচত্বরে ফুটওভার ব্রিজের নিচে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

এ সময় অপরিচিত পাঁচ থেকে ছয়জন ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা হ্যান্ডব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে যায়। ব্যাগে তার পাসপোর্ট, ভিসা, বিমানের টিকিট, আট আনা ওজনের সোনার চেন, দুটি মোবাইল সেট, একটি স্মার্ট কার্ড, প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড়সহ নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিল।

পরে ডাকাত দলের সদস্যরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে একটি বাসে তুলে নিয়ে কাউকে কিছু না জানানোর জন্য ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। এই ঘটনায় গত ১৫ অক্টোবর বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়।

অন্যদিকে ৫ অক্টোবর যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় নামেন ওমর শরিফ। নাটোরের বড়াইগ্রাম যাওয়ারকালে বিমানবন্দর এলাকা থেকে তিনি অপহৃত হন। এরপর তাকে ঢাকার বাইরে নামিয়ে দেয়া হলেও তার পাসপার্টসহ প্রয়োজনীয় সব মালামাল লুট করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ছুরি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও টাকা উদ্ধার করা হয়।

পৃথক ঘটনায় মামলা হলে তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। গোয়েন্দারা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের ওই তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ডাকাতির কার্যক্রম সম্পাদনে বিভিন্ন কৌশল অনুসরণ করে। যে প্রবাসীরা একা বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করেন, তারা তাদেরকে টার্গেট করে। টার্গেট যাত্রীদের সঙ্গে কৌশলে সখ্য গড়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

আবার কখনও বিমানবন্দর এলাকাতেই প্রবাসীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে চক্রের দুই-একজন সদস্য। পরে চক্রের অন্য সদস্যরা টার্গেট ব্যক্তিদের চেতনানাশক দ্রব্য মেশানো চা, কফি, জুস, ডাবের পানি খাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়।

তাদের খাবার খেয়ে যাত্রী অচেতন হলে তার মূল্যবান মালামাল নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে চক্রের সদস্যরা। কখনও আবার যাত্রীরা জিনিসপত্র দিতে বাধা দিলে অস্ত্র দেখিয়ে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

প্রবাসীরা কী কারণে ছিনতাইকারী চক্রের টার্গেট হচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, চক্রের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বিমানবন্দরকেন্দ্রিক তারা গত এক বছরেই অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া যায়। চক্রের মূল হোতা মাসুদুলের বিরুদ্ধেই রয়েছে সাতটি মামলা।

তিনি আরও বলেন, ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য বাংলাদেশে ঘুরতে আসা প্রবাসীরাও দ্রুত পাসপোর্ট তুলে ফিরে যাচ্ছেন। এ কারণে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা কম হচ্ছে। এ সুযোগ নিয়েই সংঘবদ্ধ চক্র বিমানবন্দরকেন্দ্রিক প্রবাসী ও বিদেশিদের টার্গেট করে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে। কার ভাড়া করে তারা এ অপরাধগুলো করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিদেশ থেকে অনেক বিদেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশে আসছেন। এসব ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ডিবি পুলিশ পুরো চক্রটিকে ধরার চেষ্টা করছে।

এ বিভাগের আরো খবর