কুমিল্লার ঘটনায় ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেয়ায় শরীয়তপুর সদর ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম ঢালীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শহিদুল সদর ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহিদুল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কথাবার্তা ও দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত। এ কারণে শরীয়তপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান সিকদার বলেন, ‘সম্প্রতি কুমিল্লার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন সময় ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠনের একজন নেতার এমন ধরনের পোস্ট ঘটনাকে আরও উসকে দেয়। ওই পোস্টে তিনি ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। বিষয়টি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নজরে আসে।
‘ছাত্রলীগ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার সংগঠন। সেখানে সাম্প্রদায়িক ভাবধারার কারও অবস্থান নেই। শহিদুল ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে সবাইকে সংগঠিত করার চেষ্টা করেছেন। যার ফলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি হতে পারে। এমন ভাবধারার নেতার ছাত্রলীগে থাকার সুযোগ নেই। তাই সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসীন মাদবর জানান, বিষয়টি সংগঠনের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ। ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানে এমন কাজ ছাত্রলীগ করে না। যারা এটি মানে না, তাদের দলে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগ একটি প্রগতিশীল সংগঠন। এমন সংগঠনে থেকে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া বা সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া অপরাধ। আবেগ দিয়ে তো সংগঠন করা যায় না।
‘অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে বলেই সে (শহিদুল) ছাত্রলীগ করে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাহলে তার মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভাবধারা কেন থাকবে? সারা দেশে যখন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যখন ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য কাজ করছেন, তখন এক নেতার এমন কর্মকাণ্ড আমাদের বিব্রত করে। সংগঠন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই আমি মনে করি।’
এ বিষয়ে শহিদুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের সংগঠন থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, আমি জেনেছি এবং এটা সত্য। কোরআন অবমাননা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি। এটা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে আর সেই অপরাধে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই।’
কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানোয় যশোরেও এক ছাত্রলীগ নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে নতুন স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।
আরও পড়ুন: পদ হারিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বললেন ‘হিন্দু-মুসলিম ভাই’
অব্যাহতি পাওয়া মেরাজ হোসেন মিঠু ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন।