বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নোয়াখালীতে দেদার লাইসেন্সহীন হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার

  •    
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ১০:৫৭

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পর্যায়ে ১০ থেকে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন করে লাইসেন্স নিতে ৪০ হাজার টাকা ট্যাক্স ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর উপজেলা পর্যায়ে দিতে হয় ২৫ হাজার টাকার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। প্যাথলজি বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের সঙ্গে ১৫ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয়।

নোয়াখালীতে ব্যঙের ছাতার মতো যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। দক্ষ চিকিৎসক ছাড়া অনুমোদনহীন এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপচিকিৎসা ও রিপোর্টে প্রতারিত হচ্ছেন রোগীরা।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের করা চলতি বছরের জরিপে দেখা গেছে, জেলায় ৩৪৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৮৮টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধ কাগজপত্র ও লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ২৫৬টির কোনো বৈধ কাগজপত্র বা লাইসেন্স নেই। অননুমোদিত এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

অবৈধ এসব বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বেশির ভাগেরই মালিকানায় বা অংশীদারত্বে রয়েছেন সরকারি দলের নেতা এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতারা। ফলে কর্তৃপক্ষ শত চেষ্টা করেও এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে নিয়মের ভেতরে আনতে পারছেন না।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২৫৬টি অননুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ১৩৫টি অনুমোদনের আবেদন জমা দিয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দেয়ায় মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন পাঠাতে পারছেন না সিভিল সার্জন। আবেদনের পর ৯৩টির এখনও পরিদর্শনই করা হয়নি।

আর বাকি ১২১টি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের আবেদন না করে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালিয়ে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অননুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একাধিক মালিক জানান, তারা প্রতি মাসে সিভিল সার্জন অফিস ও থানা পুলিশকে মাসোহারা দেন। তাই অনুমোদন না থাকলেও কার্যক্রম চালিয়ে যেতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পর্যায়ে ১০ থেকে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন করে লাইসেন্স নিতে ৪০ হাজার টাকা ট্যাক্স ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর উপজেলা পর্যায়ে দিতে হয় ২৫ হাজার টাকার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। প্যাথলজি বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের সঙ্গে ১৫ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয়। এ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে চালানের ফর্মসহ আবেদন করার পর সিভিল সার্জন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে মহাপরিচালক লাইসেন্স দেন।

তবে এসব প্রক্রিয়ায় না গিয়ে কেউ কেউ আবেদন করেই হাসপাতাল চালু করছেন। আবার কেউ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে হাসপাতাল চালালেও নিচ্ছেন না লাইসেন্স। হিসাব অনুযায়ী, এসব অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে প্রতিবছর অন্তত দুই কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি হাসপাতালের একজন পরিচালক জানান, হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে সিভিল অফিস সহকারীর মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা সিভিল সার্জনকে দিতে হয়। তাই অনেকে ইচ্ছা করেই লাইসেন্সের আবেদন করেন না। লাইসেন্স না নিয়ে বছরে ১৫ হাজার টাকা করে সিভিল সার্জন অফিসকে দিলে আর লাইসেন্সের দরকার পড়ে না।

জেলা সিভিল সার্জন মাছুম ইফতেখার জানান, কোনো হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তিনি টাকা নেননি। আর অফিসের কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর