বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সারা দেশে ‘সম্প্রীতি রক্ষা দিবস’ করবে সাংস্কৃতিক জোট

  •    
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ২০:১৮

গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সমস্ত গুজব রটানো হয়েছে, তাদের মধ্যে সরকারি দলের নামাবলী গায়ে দেয়া প্রচুর লোক রয়েছে। এদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়াটা জরুরি। এটি যদি না করা হয় তাহলে এ সব অপকর্মের দায় সরকারি দলকেই নিতে করতে হবে।’

দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ‘সম্প্রীতি রক্ষা দিবস’ পালন করবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

নোয়াখালীর চৌমুহনীতে এদিন জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস। এদিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, পূজামণ্ডপে হামলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘সম্প্রীতি রক্ষা দিবসের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে সমাবেশের আয়োজন করা হবে। হামলায় যে সব পরিবারের সদস্য নিহত এবং আহত হয়েছেন তাদের পাশে আমরা দাঁড়াব। তাদেরকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা একা নন। আপনাদের বুকে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আমাদের বুকেও সে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা একসঙ্গে আনন্দ বেদনাকে ভাগ করে এই বাংলাদেশে বাঁচতে চাই।’

চৌমুহনীতে যাওয়ার পথে কুমিল্লার যে মন্দিরে প্রথম ঘটনার সূত্রপাত হয় সে এলাকাও পরিদর্শন করবেন জোটের নেতারা।

গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সমস্ত গুজব রটানো হয়েছে, তাদের মধ্যে সরকারি দলের নামাবলী গায়ে দেয়া প্রচুর লোক রয়েছে। এদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়াটা জরুরি। এটি যদি না করা হয় তাহলে এ সব অপকর্মের দায় সরকারি দলকেই নিতে করতে হবে।’

জোটের শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘দুর্গাপূজার সময় যে যে এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে জনপ্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিনা সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে। যেসব জনপ্রতিনিধিরা সেসব এলাকায় না থেকে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে, এদের চিহ্নিত করে সরকারি দল তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয় সেটিও আমরা জানতে চাই।’

সমাবেশে নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘রাষ্ট্র ক্ষমতায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আছে ঠিকই কিন্তু সমাজ সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদী শক্তির হাতে চলে গেছে। শুনেছি, নোয়াখালীর চৌমুহনীতে পূজামণ্ডপে যখন হামলা হচ্ছিল, তখন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একজন পুলিশেরও দেখা পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, “আরেকজন বলেছেন, সেসময় পুলিশের ডিসি বা এমপিকেও ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি। এগুলো কেন হয়? আমরা শুধু লম্বা লম্বা বক্তৃতা শুনি, ‘কাউকে ছাড় দেয়া হবে না’, ‘আইনের হাত অনেক লম্বা’ ইত্যাদি। কত লম্বা আমরা দেখেছি। রামু বা নাসিরনগরে যখন হামলা হয়েছে, আমরা প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু কারও কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। কারণ আমরা সবাই এদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছি।’

রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা রাজনৈতিক দল। সব রাজনৈতিক দল হয় তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে অথবা তাদের সঙ্গে আপোস করছে। এভাবে বাংলাদেশ চলতে পারে না। আমরা আশা রাখি, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আমরা পরাভূত করতে পারব। রাজনৈতিক দলগুলো যেটাই করুক, সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় ঘটানোর চেষ্টা করে যাব।’

গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজিদ বলেন, ‘বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মূল সমস্যা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হতে পারে না। আমাদেরকে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। ক্ষমতার মসনদে বসে হেফাজত কিংবা মৌলবাদের তোষণ বন্ধ করতে হবে। আজকে সাংস্কৃতিক কর্মীরা প্রতিবাদ করছে। তবে দেশের কোথাও কোনো রাজনৈতিক দল এর প্রতিবাদ করছে না। এই আপোসকামিতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ‘এ কয়েক দিন সারা দেশে যা ঘটেছে, এটি পরিকল্পিত। এসব আক্রমণ কোনো মন্দির বা সম্প্রদায়ের প্রতি আক্রমণ নয়। এসব আক্রমণ আমাদের অসাম্প্রাদায়িক চেতনা এবং ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রতি আক্রমণ। এ ধরণের আক্রমণ করে হয়তো কিছু মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে। তবে বাংলাদেশেকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে না।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মহিলা পরিষদের সভানেত্রী ফৌজিয়া মোসলেম, গৌরব ৭১’র সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহিন, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান,বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মাহমুদ সেলিম, প্রজন্ম ৭১’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আব্বাস, আইটিআই বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফসহ অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর