কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির প্রথম সভাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সভা প্রতিহত করতে মাঠে নেমেছে নতুন কমিটির আহ্বায়কের প্রতিপক্ষ।
এ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের কর্মীসমর্থক এবং নতুন কমিটির আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিনের অনুসারীরা।
শনিবার সকাল ১০টায় পাকুন্দিয়ার দরগাবাজার এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করেন সোহরাব উদ্দিন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নূর মোহাম্মদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা সভা প্রতিহত করতে একই এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন।
স্থানীয়রা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকে সোহরাব উদ্দিনের বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেয় পুলিশ। দুপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় বের হলেও পুলিশি বাধার মুখে পিছু হটে। কোনো পক্ষের লোককে দরগা বাজারে যেতে দেয়া হয়নি।
পরে বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল জড়ো হতে থাকে উপজেলায় পুলেরঘাট বাজারে। নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে সেখানে বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন নূর মোহাম্মদের সমর্থকরা। এক পর্যায়ে তারা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে সোহরাব উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, ‘বৈধ কমিটি নিয়ে আমার বাড়ির সামনে সভা করব, তারা এতে বাধা দেয়। বিভিন্নভাবে এলাকার শান্ত পরিবেশ নষ্ট করছে তারা। গতকালও (শুক্রবার) পুলিশের সহযোগিতায় তারা আমার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছিল। তারা বাড়ির সামনে এসে ইট পাটকেল ছুড়েছে। পুলিশ তাদেরকে বাধা না দিয়ে তামাশা দেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে নিজ বাড়িতে সভা করছি, এ নিয়েও তাদের মাথা ব্যথা। মূল কথা হলো, সংসদ সদস্যের পছন্দের লোকের কমিটি না পাওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্নভাবে আমাকে কোণঠাসা করতে স্থানীয় কিছু লোক মাঠে নামিয়েছেন।’
বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সড়ক অবরোধের নেতৃত্ব দেয়া জেলা শ্রমিক লীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা রয়েছে তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হিসেবে মেনে নিতে পারিনা, মেনে নেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ কমিটিকে প্রতিহত করতে নেতাকর্মীরা গতকালও (শুক্রবার) অবস্থান নিয়েছিল, আজও অবস্থান নিয়েছে। এই কমিটি যতদিন বাতিল না হবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার জাহানের সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। ডিডটি অফিসারের নম্বরে ফোন করা হলে তাও বন্ধ পাওয়া যায়।
চলতি বছরের ২২ জুলাই সোহরাব উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগ।
কমিটি ঘোষণার পর থেকে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ এবং সাবেক সাংসদ ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
কমিটি বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ করছে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।
৯ সেপ্টেম্বর সোহরাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক রেখে ৬৭ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ।