বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঘোষণার মধ্যেই আটকে পর্যটনের প্রণোদনা

  •    
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:৪১

ট্যুর অপারেটররা ঋণ পাবেন না। হোটেল-মোটেল-রিসোর্টগুলো শর্তের কারণে ঋণ নিতে পারছে না। এ কারণে পর্যটনশিল্পকে বাঁচাতে ১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণ হয়নি।

গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন খাত। ব্যাপক জনসমাগম এড়াতে শুরু থেকেই বন্ধ ছিল পর্যটনকেন্দ্রগুলো। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর ধীরে ধীরে খুলতে থাকে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। তবে বিদেশি পর্যটক আসা এখনও শুরু হয়নি।

করোনায় অনিশ্চয়তার কারণে পর্যটন পেশায় থাকা অন্তত ৬০ ভাগ কর্মী বিকল্প পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। পর্যটন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এখনও অনেক সময় লাগবে।

এ পরিস্থিতিতে এ খাতকে খাদের কিনার থেকে তুলে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৩ জুলাই প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এতে এ খাতের অনুকূলে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। এর আওতায় পর্যটন খাতের হোটেল, মোটেল, থিম পার্কগুলো তাদের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংকব্যবস্থার মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ সহায়তা পাওয়ার কথা।

তবে প্রণোদনা ঘোষণার দুই মাস পরও এখনও এর সুফল না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে শুধু হোটেল, মোটেল, থিম পার্কের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য। এর বাইরে যারা আছেন তাদের এ সুবিধা নেয়ার সুযোগ নেই।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি রাফিউজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন, এটা মূলত হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য। এ কারণে আমাদের পাওয়া না-পাওয়ার কোনো প্রশ্ন আসছে না।

‘এই টাকা মালিকরা অন্য কাজে লাগাতে পারবে না। এ কারণে ট্যুর অপারেটররা কোনো সহযোগিতা পায়নি।’

এদিকে হোটেল-মোটেলগুলো বলছে, প্রণোদনার কঠিন শর্তে তারাও প্রণোদনাবঞ্চিত। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিহা) তথ্য মতে, দেশে এখন ১৭টি পাঁচ তারকা হোটেলসহ তিন ও চার তারকাবিশিষ্ট মোট ৫০টি হোটেল আছে। এদের কেউই এই প্রণোদনা পায়নি।

বিহার সাধারণ সম্পাদক মহাসিন হক হিমেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রণোদনার সুফল এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, কোনো হোটেলই এখন পর্যন্ত টাকা পায়নি।

‘এর কারণ হলো, এতে একটি ক্লজ আছে যে যাদের ঋণ আছে, তারা নতুন করে লোন পাবে না। বেশির ভাগ হোটেলই তো ব্যাংক লোন নিয়ে তৈরি করা। এ কারণে প্রণোদনা পায়নি। কেউই পায়নি।’

বিহার এই নেতা মনে করেন, প্রণোদনার শর্ত সহজ করা হলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মত হলো, যেহেতু বড় হোটেলগুলো ব্যাংক লোন নিয়ে করা হয়েছে, সেগুলোকে যদি সহজ কোনো শর্তে প্রণোদনা দেয়া হতো, তাহলে আমরা সুফলটা পেতাম। প্রণোদনা এখনও ঘোষণার মধ্যেই আছে। কঠিন শর্তের কারণে ইমপ্লিমেন্টেশন হচ্ছে না।’

ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটনশিল্পকে গোছাতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে বলে দাবি করেছেন পর্যটনসচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পর্যটনশিল্প কোভিডের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য এ সময়ে কীভাবে সহায়তা করা যায়, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। সেখানে খুব স্বল্প সুদে তারা লোন পাচ্ছেন, আমরা সেটি সমন্বয় করে দিচ্ছি।

‘কোভিডের কারণে অনেক কর্মী যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের মাধ্যমে এনে কীভাবে সহায়তা দেয়া যায়, সেটিও আমরা বিবেচনা করছি। কোভিডকালীন সমস্যার জন্য আমরা একটি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি করে দিয়েছি। তারাও কাজ করছে।’

এর বাইরেও পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে একটি সার্ভে করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পর্যটনসচিব বলেন, ‘কীভাবে কোভিড আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং ভবিষ্যতে এর প্রভাবটা কীভাবে পড়বে বা আমরা কীভাবে এর থেকে উত্তরণ পেতে পারি, সে দিকগুলো খুঁজতে আমরা কাজ করছি।’

দেশে সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়কে ধরা হয় পর্যটন মৌসুম। সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও টোয়াবের হিসাবে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর দেশে গড়ে বিদেশি পর্যটক আসে ৫ লাখের মতো। অবশ্য করোনার কারণে গত বছরের মার্চ থেকে এই সংখ্যা শূন্যের কোঠায়।

এর বাইরেও বছরজুড়ে দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে আনাগোনা থাকে ৬০ থেকে ৭০ লাখ অভ্যন্তরীণ পর্যটকের। গত বছর করোনার মধ্যেও ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা আয় করেছে পর্যটন খাত।

এ বিভাগের আরো খবর