চট্টগ্রামে একটি মন্দিরে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিমা বিসর্জন না করার ঘোষণা দিলেও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।
প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে ওই ঘোষণার তিন ঘণ্টা পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পতেঙ্গা, নেভাল-২-সহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়।
ওই ঘটনার পর ঘোষণা করা আধাবেলা হরতাল অবশ্য বহাল আছে।
হরতালের ঘোষণা দেয়া বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যেহেতু হরতাল ডেকেছি, এখনও হরতালের পক্ষেই আছি। হরতাল স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেয়া হয়নি।’
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রতিমা বিসর্জনে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করায় মহানগরের অধীন থানা পূজা কমিটিকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু করার জন্য বলে দেয়া হয়েছে। আর জেএম সেন হলের প্রতিমা বিসর্জন করা হবে নেভাল এলাকায়।’
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত জানান, চট্টগ্রাম জেলায় ১ হাজার ৯৬৪টি মণ্ডপে এবার দুর্গাপূজা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বজনীন পূজা ১ হাজার ৫৫৩টি। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, বিভিন্ন উপজেলায় সকালে এবং বাকিগুলোতে বিকেলে সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবুল কালাম বলেন, ‘প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের পতেঙ্গা, নেভালসহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
‘যানজট নিরসন, প্রতিমা নিয়ে আসা ট্রাক চলাচল ও বিসর্জনে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।’
এর আগে শুক্রবার দুপুরে একদল লোক নগরীর জেএম সেন হল পূজামণ্ডপের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা এবং সড়ক ও তোরণের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে বলে অভিযোগ করে পূজা উদ্যাপন কমিটি। এর পরই প্রতিমা বিসর্জন স্থগিতের ঘোষণা দেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
এ ঘোষণার কারণে বেলা আড়াইটা থেকে মহানগরের পূজামণ্ডপগুলোর প্রতিমা বিসর্জনের কর্মসূচি থাকলেও তা শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদরা নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত করার পর আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।