চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে একটি বাড়ি থেকে এক নারী ও তার দুই শিশুসন্তানের মৃত্যুর রহস্য বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা বলছে, পারিবারিক কলহকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে গৃহবধূর স্বামী সোহেল রানাকে।
পাঁচলাইশের মোহাম্মদপুর এলাকার একটি ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃতরা হলেন গৃহবধূ সুমিতা খাতুন, তার ৭ বছরের মেয়ে জান্নাত মুন ও আড়াই বছরের ছেলে শান।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির জানান, ভোর ৫টার দিকে খবর আসে ওই ফ্ল্যাটের দরজা সারা রাত ভেতর থেকে বন্ধ। গৃহকর্তা সোহেল রানা ঘরে ঢুকতে পারেননি রাতভর। সন্দেহ হওয়ায় তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ভোরে গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মরদেহগুলো দেখতে পায় পুলিশ। এর মধ্যে সুমিতা ও শিশু শানের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বিছানায় পড়ে ছিল জান্নাতের নিথর দেহ।
গৃহকর্তা সোহেল জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তিনি কাজ শেষে ফিরে দেখেন, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে তিনি আত্মীয়-প্রতিবেশীদের খবর দেন। সারা রাত ধরে সবাই চেষ্টা করেও ভেতর থেকে সাড়া পাননি। এরপর পুলিশে খবর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেসুর রহমান, অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) আরাফাতুন ইসলাম, পাঁচলাইশ সার্কেলের সহকারী কমিশনার শহিদুল ইসলাম, পিবিআই পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা ও সিআইডির সদস্যরা।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধারণা করছি, শ্বাসরোধে প্রথমে ছেলেকে হত্যা করা হয়। তারপর মেয়েকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেন মা।’
ফ্ল্যাটের ওপর তলার বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, ওই দম্পতির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তারা ওপর থেকে চিৎকার শুনতেন। তবে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন বাড়ির গৃহকর্মী জোছনা বেগম। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘১৫ দিন ধরে ওই বাসায় কাজ করছি। সবকিছু স্বাভাবিক দেখেছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার বাচ্চাদের মা চুপচাপ ছিলেন। বাড়ির কর্তা এদিন দুপুরে বাড়ি এলেও খাবার না খেয়েই চলে যান।’
গৃহকর্তা সোহেলের বোন লিপি আক্তার বলেন, ‘১০ বছর ধরে তারা সংসার করছেন। আড়াই বছর ধরে ওই ভবনে আছেন। সব পরিবারের মতো ছোটখাটো কলহ তো হতো। তবে এমন কিছু ঘটার মতো কিছু হয়নি।’